মাকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ ছেলের বিরুদ্ধে। রাজারহাটের বৈদিক ভিলেজে অভিজাত আবাসনের এই ঘটনায় তাজ্জব সকলে। মৃতের নাম দেবযানী মজুমদার (৬০)। অভিযুক্ত ছেলে সৌমিক মজুমদারকে গ্রেপ্তার করেছে রাজারহাট থানার পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে খবর, কয়েক বছর আগে সৌভিকের বাবা মারা যান। এর পর থেকেই মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেন সৌমিক। ইদানিং কোনও কাজও করেন না তিনি। সংসারে মা-ছেলেই থাকতেন। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে ভয়ঙ্কর এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, সৌমিকদের বাড়ি মালদায়। ২০২১ সালে রাজারহাটে বৈদিক ভিলেজের মধ্যে গ্রিন টেক সিটি আবাসনে ফ্ল্যাট কেনে মজুমদার পরিবার। সৌমিকের বাবা সরকারি চাকরি করতেন। মা-বাবা-ছেলে মালদা থেকে রাজারহাটে এসে ওঠেন। কিন্তু নতুন ফ্ল্যাটে আসার কিছু দিনের মধ্যেই স্বামীকে হারান দেবযানী।
এলাকার লোকজন জানান, সৌমিক আইটি সেক্টরে কাজ করতেন। কিন্তু বাবা মারা যাওয়ার পর মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন। চাকরি ছেড়ে দেন। ব্যাঙ্কের জমানো টাকা পয়সা তুলেই মা-ছেলের সংসার চলছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, কষ্ট করেই সংসার চলত তাঁদের।
অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাত ১১টা নাগাদ ওই ঘটনা ঘটে। অভিযোগ, আলমারি থেকে টাকা বের করতে চান সৌমিক। তাতে দেবযানী বাধা দেন। এর পরই রান্নাঘর থেকে ছুরি এনে সৌমিক মায়ের গলায় তা চালিয়ে দেন বলে অভিযোগ। এমনও অভিযোগ, রাতভর মায়ের নিথর দেহ নিয়ে ঘরেই বসেও ছিলেন ছেলে।
সৌমিকরা আবাসনের যে ব্লকে থাকেন, তার আশেপাশের ফ্ল্যাট ফাঁকা। ফলে রাতভর কেউ কিছু টেরও পাননি। শুক্রবার সকালে আবাসনের নীচে চায়ের দোকানে যান সৌমিক। সেখানেই প্রথম এই ঘটনা জানান। যদিও প্রথমে দোকানে থাকা লোকজন তা বিশ্বাস করতে চাননি। ভেবেছিলেন মজা করছেন ওই যুবক। পরে সিকিউরিটি গার্ডকে বিষয়টি জানান। সকলে গিয়ে দেখেন, দেবযানীর দেহ ঘরের মেঝেতে পড়ে, ঘর ভাসছে রক্তে। খবর দেওয়া হয় রাজারহাট থানায়। পুলিশ এসে দেহ উদ্ধারের পাশাপাশি সৌমিককে গ্রেপ্তারও করে। বাজেয়াপ্ত করা হয় ওই ছুরি।
রিপোর্ট: প্রশান্ত ঘোষ