• রিসর্টে ধর্ষণ? ফুটেজে ধন্দ অভিযোগ ঘিরেও
    এই সময় | ১১ এপ্রিল ২০২৫
  • এই সময়, হাসনাবাদ: বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার নাম করে এক যুবতীকে গাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল দুই যুবকের বিরুদ্ধে। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে হাসনাবাদ থানা এলাকার একটি রিসর্টে। যুবতীর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। রাত পর্যন্ত কোনও গ্রেপ্তারের খবর নেই।

    পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার দুপুরে ব্যাঙ্কের কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিলেন বসিরহাট থানার পিফা গ্রামের ওই যুবতী। সেই সময় রাস্তায় দেখা হয় এলাকার পরিচিত এক যুবকের সঙ্গে। সেই যুবক তাঁকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে একটি গাড়িতে তোলে। আরও এক যুবক আগে থেকেই গাড়িতে বসে ছিল।

    অভিযোগ, যুবতীর বাড়ির রাস্তায় না গিয়ে গাড়িটি হঠাৎ অন্য রাস্তা ধরে। তখন ওই যুবতী গাড়ি থেকে তাঁকে নামিয়ে দেওয়ার জন্য যুবকটিকে অনুরোধ করেন। সেই সময় রসিকতার ছলে যুবকটি বলে, ‘তুমি আমার গাড়িতে উঠেছ নিজের ইচ্ছায়। কিন্তু নামতে হবে আমার ইচ্ছায়।’

    এরপর যুবতীকে একরূপ জোর করেই সেখান থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে হাসনাবাদ থানা এলাকার একটি রিসর্টে নিয়ে যাওয়া হয়। যুবতীর দাবি, রিসর্টে ঢুকতে তিনি প্রথমে অস্বীকার করেন। তখন দুই যুবক তাঁকে জোর করে টেনে নিয়ে যায় রিসর্টের একটি ঘরে। সেখানেই তাঁর উপর পাশবিক অত্যাচার চালায় পরিচিত যুবকটি। রাতের দিকে তাঁকে রাস্তায় ছেড়ে দিয়ে যায় তারা। বুধবার রাতেই হাসনাবাদ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই যুবতী।

    বৃহস্পতিবার সকালে নির্যাতিতা বলেন, ‘ব্যাঙ্কের কাজ সেরে দুপুরে আমি যখন বাড়ি ফিরছিলাম, সেই সময় ওই যুবকের সঙ্গে আমার দেখা হয়। ওকে আমি আগে থেকেই চিনতাম। আমাকে বলেছিল, ওর গাড়িতে করে বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দেবে। ওর কথায় বিশ্বাস করে আমি গাড়িতে উঠে বসি। গাড়িতে আরও এক জন যুবক ছিল। কিছুটা যাওয়ার পর আমার বাড়ির দিকে না গিয়ে গাড়িটি অন্য রাস্তা ধরে। তখন আমি গাড়ি থেকে নামিয়ে দিতে বলি। কিন্তু ওরা জোর করে আমাকে রিসর্টে নিয়ে গিয়ে আমার উপর পাশবিক অত্যাচার করে।’ তিনি বলেন, ‘আমি ওদের কড়া শাস্তি চাই। আমার সঙ্গে যে ঘটনা ঘটেছে, সেটা যাতে আর কারও সঙ্গে না ঘটে।’

    রিসর্টের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের এখানে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে আমাদের জানা নেই। যদি সে রকম কিছু ঘটনা ঘটে থাকে, তা হলে আমরা পুলিশকে তদন্তে সহযোগিতা করব।’

    বসিরহাট পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার হোসেন মেহেদি রহমান বলেন, ‘একটা অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত শুরু হয়েছে।’

    জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে রিসর্টে ঠিক কী ঘটেছিল, তা জানতে সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করা হচ্ছে। রিসর্ট কর্তৃপক্ষের ভূমিকা কী ছিল, সেটাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্তদের খোঁজে পুলিশ তল্লাশি শুরু হয়েছে। এর মধ্যেই রিসর্টের একটি সিসিটিভি ফুটেজ সামনে এসেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, ওই যুবতী একা হেঁটে রিসর্টে ঢুকছেন। যদিও মহিলা অভিযোগ করেছেন, তাঁকে জোর করে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ফলে তাঁর অভিযোগটি কতটা সত্য, তা নিয়ে ধন্দে পড়েছে পুলিশ।

  • Link to this news (এই সময়)