• পুলিশকে গোলাপ, ছবি এঁকে প্রতিবাদে শিক্ষকেরা
    এই সময় | ১১ এপ্রিল ২০২৫
  • সমীর মণ্ডল, মেদিনীপুর

    মানুষ গড়ার কথা ওঁদের। ওঁদের শিক্ষায় জীবন শুরু হয়। কিন্তু ওঁদের লাথি মারতে একবারও ভাবেনি পুলিশ। কিন্তু তবু ওঁরা শিক্ষক। তার প্রমাণ দিলেন বৃহস্পতিবার। পুলিশকে গোলাপ দিলেন শিক্ষকেরা। কলকাতার কসবা ডিআই অফিসে চাকরিহারা শিক্ষকদের পুলিশ লাথি ও লাঠিচার্জ করে।

    ওই ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর শহরে পথে নেমে প্রতিবাদ করে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা-শিক্ষাকর্মীদের পাশে দাঁড়াতে বেশ কিছু সংগ্রামী মঞ্চের সদস্য-সদস্যারা মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলের সামনে থেকে মিছিল করে কালেক্টরেট মোড়ে আসেন। সেখানে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন, সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন মঞ্চের নেতারা।

    এ দিন ফুল দেওয়ার সময়ে শিক্ষকদের বুকে ‘ছাতি দিলাম, লাথি মারো’ পোস্টার লাগানো ছিল। তবে গোলাপ নেবেন কি না, তা নিয়ে চিন্তায় পড়েন পুলিশ কর্মীরা। কিছুক্ষণ ভাবার পরে ফুলের দিকে হাত বাড়িয়ে দেন পুলিশ কর্মী। এ দিন পুলিশকে শিক্ষকেরা বলেন, ‘আপনাদের পুলিশ বন্ধুরা আমাদের শিক্ষকদের পেটে লাথি মারলেও আমরা আপনাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করব না। কারণ আপনারাও একদিন ছাত্র ছিলেন। আপনাদের ছেলেমেয়েরা অনেকেই হয়তো আমাদের ছাত্রছাত্রী। আমরা যদি খারাপ ব্যবহার করি, আপনাদের ছেলেমেয়েদের কী শেখাব?’

    এ দিন দিকে দিকে প্রতিবাদে শামিল হন শিক্ষক-সহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। কেউ মিছিল করে, কেউ বিক্ষোভ দেখিয়ে, ছবি এঁকে প্রতিবাদ করেন। এমনকী, পুলিশের লাথি মারার ছবিও আঁকেন কেউ। শিক্ষক নরসিংহ দাস বলেন, ‘এই অপমান মেনে নিতে পারিনি। তাই বসে বসে এই ছবি এঁকে প্রতিবাদ জানালাম।’

    সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের পক্ষে স্নেহাশিস কোনার বলেন, ‘শুধু রাজ্য সরকার ও রাজ্যের শিক্ষা দপ্তরের কারণে অযোগ্য শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের সঙ্গে চাকরি গেল হাজার হাজার যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর। যাঁদের স্কুলে থাকার কথা তাঁদের পথে বসিয়েছে এই সরকার। যোগ্য-অযোগ্য আলাদা করতে পারেনি এসএসসি। যে কারণে সকলে চাকরি হারিয়েছে। তারপরে পুলিশের লাথি! ধিক্কার জানানোর ভাষা নেই।’

    শিক্ষক আশিস কুমার মাজি ও মহম্মদ স্রিফ মল্লিকরা বলেন, ‘পুলিশ আমাদের শিক্ষকদের লাথি মারলেও, আমরা তাঁদের গোলাপ দিয়েই প্রতিবাদ জানাব।’

  • Link to this news (এই সময়)