শ্রীকান্ত ঠাকুর: হস্টেলে নাকি ভূত আছে! ভূতের গুজবে স্কুল হস্টেল ছেড়ে বাড়ির দিকে পা বাড়াচ্ছে ছাত্রীরা। ঘটনাটি ঘটেছে বালুরঘাট ব্লকের কালিকাপুর হাইস্কুলের মেয়েদের হস্টেলে। এই হস্টেলে পঞ্চম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত ৭০ জন ছাত্রী থাকে। তাদের দাবি, কয়েকদিন আগে থেকেই এই হস্টেলে ছাত্রীরা রাতে নানা ধরনের আওয়াজ শুনতে পাচ্ছিল। এরপর বুধবার রাতে ভূতের উৎপাতে তারা সারারাত ঘুমাতে পারেনি। কেউ বলে নূপুরের আওয়াজ শুনেছে! কেউ আবার বলে মানুষের গলার আওয়াজ! অস্বাভাবিক সব আওয়াজ! এই গুজব ছড়িয়ে পড়তেই তীব্র আতঙ্ক ছড়ায় ছাত্রীদের মধ্যে।
শেষে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই ব্যাগপত্র গুটিয়ে বাড়ির উদ্দেশে পা বাড়াতে শুরু করেছে ছাত্রীরা। আতঙ্ক কাটাতে স্কুলের শিক্ষকরা চেষ্টা করেন। কিন্তু সে চেষ্টা বিফল হয়েছে। ছাত্রীদের মনে ভূতের উপদ্রবের বদ্ধমূল ধারণা দূর করা যায়নি। যার ফলে স্কুল হস্টেল থেকে চলে যাওয়াও আটকানো যাচ্ছে না। বৃহস্পতিবার বেশ কিছু ছাত্রী তাদের ব্যাগপত্র নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। আজও হস্টেল ছাড়ে অনেকে। এই হস্টেলটি শুধুমাত্র মেয়েদের জন্য এবং এখানে আদিবাসী সম্প্রদায়ের পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীরাই শুধু থাকার সুযোগ পায়। ওদিকে কালিকাপুর হাইস্কুলের আরও একটি হস্টেল রয়েছে, যেখানে শুধুমাত্র ছেলেরাই থাকতে পারে। কিন্তু ছেলেদের হস্টেলে সেই রকম কোনও ঘটনা ঘটেনি। সেখানে স্বাভাবিক রয়েছে পরিস্থিতি। মেয়েদের হস্টেলেই এই ভূতের গুজব ছড়িয়েছে। যার জেরে হস্টেল ছেড়ে বাড়িমুখো ছাত্রীরা।
স্কুল সূত্রে খবর, মাসখানেক আগে ছাত্রীরা নিজেদের মধ্যেই 'ভূত ভূত' খেলা করতে গিয়ে, এক ছাত্রী ভয়ংকর অসুস্থ হয়ে পড়ে। তারপর সেই ছাত্রীর চিকিৎসা করিয়ে তাকে বাড়ি পাঠানো হয়। তারপর হঠাৎ করেই বিগত কয়েকদিন ধরে আবার এই ভূতের আতঙ্ক ছড়িয়েছে ছাত্রীদের মধ্যে। বৃহস্পতিবার ছিল ছুটি। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ গতকাল বিজ্ঞান মঞ্চকে ডেকে ছাত্রীদের মধ্যে থেকে ভূত-ভীতি দূর করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি, ছাত্রীরা সেই হস্টেল ছেড়ে যাচ্ছেই।