কাজ পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ভিন রাজ্যে নিয়ে গিয়ে শরীর থেকে বার করে নেওয়া হয় কিডনি, এই অভিযোগ ঘিরে শুক্রবার তীব্র শোরগোল পড়ল দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরে। ঘটনায় দু’জনকে আটক করেছে বারুইপুর থানার পুলিশ। এই ঘটনার নেপথ্যে কি কাজ করছে বড় কোনও চক্র? উত্তর খুঁজছে পুলিশ।
ঘটনার সূত্রপাত হয় শুক্রবার দুপুরে বারুইপুর বিডিও অফিসের সামনে ২ ব্যক্তির বচসাকে কেন্দ্র করে। তাঁদের কথাকাটাকাটি হাতাহাতিতে পৌঁছে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বারুইপুর থানার পুলিশ। ২ ব্যক্তিকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে যে কেউটে বার হয়ে যাবে, তা তখনও বুঝতে পারেনি পুলিশ। ওই দুই ব্যক্তির মধ্যে একজনের নাম শামসুদ্দিন লস্কর। তিনি বারুইপুর থানার হিমচি এলাকার বাসিন্দা। অন্য ব্যক্তির নাম শুভ ভট্টাচার্য। তিনি হুগলি জেলার বাসিন্দা।
শামসুদ্দিন লস্করের অভিযোগ, প্রায় ৩ মাস আগে তাঁকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে কাজের সুযোগ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে উত্তরপ্রদেশে নিয়ে গিয়েছিলেন শুভ। অভিযোগ, সেখানে নিয়ে গিয়ে তাঁকে একটি হোটেলে আটকে রাখা হয়। কেড়ে নেওয়া হয় তাঁর মোবাইল ফোনও। এর পর তাঁকে মারধর করে ভয় দেখানো হয় এবং কিডনি দিতে বাধ্য করা হয়। শামসুদ্দিনের অভিযোগ, উত্তরপ্রদেশের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর কিডনি অস্ত্রোপচার করে ‘চুরি’ করে নেওয়া হয়।
তাঁকে বলা হয়েছিল, কিডনি দিলে ৭ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। অভিযোগ, তাঁর শরীর থেকে কিডনি কেটে নেওয়া হলেও ওই চক্র মাত্র ২ লক্ষ টাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়েছিল। বাকি টাকা দেওয়া হয়নি। এই ঘটনার পরে শুভকে আর দেখতে পাননি শামসুদ্দিন।
শুক্রবার শুভ ভট্টাচার্যকে শামসুদ্দিনের পরিবার বিডিও অফিসের সামনে দেখে ঘেরাও করে এবং দু’পক্ষের মধ্যে বচসা শুরু হয়। স্থানীয়রা এই বচসা এবং বিশৃঙ্খলার পরিস্থিতি দেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ প্রথমে দু’জনকেই আটক করে থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু তাঁদের জেরা করে যে তথ্য উঠে আসে তাতে মোড় বদলে যায় ঘটনার।
পুলিশের সন্দেহ, এই ঘটনার নেপথ্যে বড় কোনও চক্র রয়েছে। আপাতত এই দু’জনকেই আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হবে বলে জানানো হচ্ছে পুলিশের তরফে।