• সুরের মোহনা পাথরের বাঁশিতে, শুশুনিয়ার শিল্পীর অনন্য সৃষ্টি...
    আজকাল | ১২ এপ্রিল ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: একখণ্ড পাথর কেটে তৈরি করা এক অপূর্ব বাঁশি। যেখানে পাথরের কাঠিন্যকে শিল্পের ছোঁয়ায় বদলে দিয়ে মিলছে সুরের মূর্ছনা। এই আশ্চর্য শিল্পকর্মের নির্মাতা পাথর শিল্পী অভিক কর্মকার। যিনি প্রায় ২১০ দিন পরিশ্রম করে একখণ্ড পাথরকে রূপ দিয়েছেন সুরের বাহন-এ।

    এই পাথরের বাঁশিতে খোদাই করা হয়েছে শ্রীকৃষ্ণের জীবনের নানা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। কংস বধ, মথুরা যাত্রা, বৃন্দাবনের লীলার মতো নানা গাঁথা। শিল্পী নিজেই জানান, বাঁশি মানেই যেন কৃষ্ণ, আর কৃষ্ণ মানেই অনন্ত সুরের আধার। সেই ভাবনাতেই বাঁশির গায়ে ফুটিয়ে তুলেছেন কৃষ্ণভাবনার রূপ। কারুকার্যে মোড়া এই বাঁশি শুধু চমকপ্রদ একটি শিল্পনিদর্শনই নয়, এর মধ্য দিয়েই উঠে এসেছে শ্রীকৃষ্ণের আধ্যাত্মিক রূপও।

    সবচেয়ে বিস্ময়ের বিষয়, এই পাথরের বাঁশিটি দিয়ে তোলা যায় অপূর্ব সুর। শিল্পী প্রথমে পরীক্ষামূলক ভাবে তৈরি করেন বাঁশিটি। পরে আবিষ্কার করেন তা দিয়ে বাজানো যায় সুর। এটি অন্যান্য সাধারণ বাঁশির মতোই সুর তোলে। এমনকি কিছু ক্ষেত্রে তার চেয়েও মোহময়। এটাই মনে করছেন অনেকে। 

    এই সৃষ্টি শুধু স্থানীয় মানুষের মন জয় করেনি। রাজ্য স্তরেও স্বীকৃতি পেয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ কারুশিল্প প্রতিযোগিতায় এই বাঁশিটি বাজিয়ে অভিক কর্মকার প্রথম স্থান অর্জন করেছেন। রাজ্যস্তরেও মিলেছে সম্মান।

    শুসুনিয়া গ্রামের প্রায় প্রতিটি পরিবারই পাথর শিল্পের সঙ্গে জড়িত। অভিক কর্মকারের এই অভিনব সৃষ্টির মাধ্যমে সেই ঐতিহ্য আরও একবার আলোকিত হল। পাথরের কাঠিন্যকে জয় করে সুরের কোমলতা এনে, শিল্পী দেখিয়ে দিলেন—সৃষ্টি সত্যিই এক অপার বিস্ময়।
  • Link to this news (আজকাল)