ভরসা পাশের রাজ্য বা অন্য জেলার ইন্টারনেট, জায়গায় জায়গায় ভিড় যুবক-যুবতীদের ...
আজকাল | ১২ এপ্রিল ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: ওয়াকফ সংশোধনী আইন আন্দোলনকে ঘিরে গত মঙ্গলবার উত্তাল হয়ে উঠেছিল মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গিপুরের রঘুনাথগঞ্জ শহর। গুজব ছড়ানো আটকানোর জন্য সেই দিনই প্রশাসনের নির্দেশে গোটা মুর্শিদাবাদ জেলা জুড়ে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করার নির্দেশ জারি হয়। তবে গত দু'দিনে জেলার বেশিরভাগ অংশে ইন্টারনেট পরিষেবা স্বাভাবিক হলেও জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার বেশিরভাগ অংশেই , শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত ইন্টারনেট পরিষেবা স্বাভাবিক হয়নি।
গত প্রায় তিন দিন ধরে একটানা ইন্টারনেট পরিষেবা না পেয়ে সমস্যার মুখে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে বিভিন্ন সরকারি দপ্তর সহ হাসপাতাল ,শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। এমনকী জেলার পুলিশ প্রশাসনের শীর্ষকর্তাদের ফোনেও ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় তারাও হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজের পরিবর্তে টেক্সট মেসেজ করেই একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন ।
জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার আনন্দ রায় শুক্রবার জানান, 'আমরা গোটা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই ইন্টারনেট পরিষেবা স্বাভাবিক হতে পারে।' সূত্রের খবর শুক্রবার রাত থেকে ইন্টারনেট পরিষেবা স্বাভাবিক হওয়ার কথা থাকলেও সুতিতে নতুন করে উত্তেজনা ছড়ানোর কারণে আপাতত ইন্টারনেট সংযোগ ফিরছে না। তবে বাড়িতে বসে ইন্টারনেট সংযোগ পেতে অসুবিধা হলেও ফরাক্কা , সামশেরগঞ্জ সুতির মত বেশ কিছু ব্লকে পার্শ্ববর্তী রাজ্য বা জেলার মোবাইল ফোনের টাওয়ার থেকে ইন্টারনেট সংযোগ মিলছে। আর সে কারণেই জেলায় স্বাভাবিক ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ হওয়ার পর মুর্শিদাবাদ জেলার বিভিন্ন এলাকায় নদীর ধারে, মাঠে আর রাস্তার পাশে প্রচুর যুবক-যুবতীদের জটলা বেড়েছে। রাত বাড়লেও সে জটলা কমছে না।
সূত্রের খবর, জেলার ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকলেও ফরাক্কা ব্যারেজ প্রকল্প এলাকায় গঙ্গার ধারে ,বেনিয়ারগ্রামে গঙ্গার ধার সংলগ্ন এলাকায় স্বাভাবিক ইন্টারনেট পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছে। এই কারণে সকাল থেকে সন্ধে পর্যন্ত অল্পবয়সী ছেলে মেয়েরা ঘন্টার পর ঘন্টা নদীর ধারে বসে সময় কাটাচ্ছেন।
জানা গিয়েছে, ফরাক্কা গান্ধী ঘাট সংলগ্ন এলাকায় খুব সহজে মালদা জেলার টাওয়ার থেকে ইন্টারনেট সংযোগ পাওয়া যাচ্ছে। ফরাক্কার বাসিন্দা অভিজিৎ মন্ডল বলেন,'আমি এমন একটি কাজের সঙ্গে যুক্ত যেখানে ইন্টারনেট পরিষেবা খুবই জরুরী। তাই বাড়িতে খাওয়া-দাওয়ার সময়টুকু বাদ দিলে বাকি বেশিরভাগ সময়টাই গান্ধীঘাটে গঙ্গার ধার সংলগ্ন এলাকায় বসে নিজের কাজ করতে হচ্ছে।' একই ছবি ধরা পড়েছে সুতির আহিরণের পাদুয়াপাড়া ,আহিরণ ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা এবং বংশবাটি ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায়। এই জায়গাগুলোতে ঝাড়খন্ড এবং বীরভূমের কয়েকটি এলাকার মোবাইল ফোনের টাওয়ার থেকে ইন্টারনেট সংযোগ পাওয়া যাচ্ছে। সামশেরগঞ্জেও ঝাড়খণ্ডের পাকুড় সংলগ্ন যে সমস্ত এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছে সেখানে অল্প বয়সী ছেলেমেয়েদের প্রচুর ভিড় নজরে এসেছে। তবে এদের বেশিরভাগই অনলাইন গেম এবং নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ঘাঁটতেই বেশি ব্যস্ত। জয়ন্ত নস্কর নামে এক যুবক জানান,' আমি নিয়মিত বিভিন্ন ব্যক্তির সোশ্যাল মিডিয়া কন্টেন্ট সম্পদনার কাজ করি। সম্পাদনার কাজ করার পর ক্লায়েন্ট-এর কাছে তা পাঠানোর জন্য ইন্টারনেট সংযোগ অত্যন্ত জরুরী। গত তিনদিন ধরে আমার মত অনেকেই প্রচন্ড সমস্যার মধ্যে রয়েছেন। আমরা প্রশাসনের কাছে আবেদন করছি দ্রুত ইন্টারনেট পরিষেবা স্বাভাবিক করার জন্য।'