ওয়াকফ-বিক্ষোভে ফের হিংসা মুর্শিদাবাদে, পাথর-হামলা স্টেশনে, আহত পুলিশ
আজ তক | ১২ এপ্রিল ২০২৫
ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ঘিরে আবারও হিংসা ছড়াল মুর্শিদাবাদে। শুক্রবার নিমতিতা রেলস্টেশনে হামলা চালান বিক্ষোভকারীরা। ট্রেনে ছোড়া হয় পাথর। বেশ কয়েকটি ট্রেনের যাত্রাপথ পরিবর্তন করা হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে দুটি ট্রেন। মুর্শিদাবাদের বেশ কয়েকটি এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে বিএসএফ জওয়ানদের। জখম হয়েছেন ৭-৮জন পুলিশ কর্মী। এর মধ্যে রয়েছেন ফরাক্কার এসডিপিও এবং সামশেরগঞ্জ থানার ওসি। জঙ্গিপুর এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা আপাতত বন্ধই থাকছে। বুধবারের হিংসার পরই ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ হয়েছিল।
হিংসার কারণে রেল চলাচল ব্যাহত
হিংসার কারণে ধুলিয়ানগঙ্গা এবং নিমতিতার মাঝে ট্রেন চলাচল ব্যাহত। ভারতীয় রেলওয়ে জানিয়েছে,নিউ ফরাক্কা-আজিমগঞ্জ রেল সেকশনে রেল পরিষেবা ব্যাহত। প্রায় ৫০০০ বিক্ষোভকারী রেললাইন দখল করে রেখেছিলেন। ৪২ এবং ৪৩ নম্বর এলসি গেটের কাছে অবস্থান করছিলেন তাঁরা। ৫৩০২৯টি আজিমগঞ্জ-ভাগলপুর প্যাসেঞ্জার এবং ৫৩৪৩৫টি কাটোয়া-আজিমগঞ্জ প্যাসেঞ্জার ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। যাত্রাপথ পরিবর্তন করা হয়েছেন পাঁচটি ট্রেনের। এর মধ্যে রয়েছে ১৩৪৩২ বালুরঘাট-নবদ্বীপ ধাম এক্সপ্রেস, ১৫৬৪৪ কামাখ্যা-পুরী এক্সপ্রেস, ১৩১৪১ শিয়ালদা-নিউ আলিপুরদুয়ার তিস্তা তোর্সা এক্সপ্রেস, ০৫৬৪০ কলকাতা-শিলচর স্পেশাল এবং ১৩৪৬৫ হাওড়া-মালদা টাউন ইন্টারসিটি।
ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে মুর্শিদাবাদে ফের হিংসা
শুক্রবার ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলাকালীন মুর্শিদাবাদে আবারও হিংসা। মুর্শিদাবাদে নতুন ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ে। এর আগে তারা ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেছিল। পুলিশ তাদের সরাতে গেলে পাথর ছোড়া শুরু হয়। এর পর পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। করা হয় লাঠিচার্জও। দু'দিন আগেও পুলিশের উপর হামলা চালানো হয়েছিল। বিক্ষোভকারীরা দু'টি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
দেশের বাকি অংশ শান্ত, বাংলায় হিংসা
এবার পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া দেশের অন্য প্রান্তে ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে এমন হিংসা দেখা যায়নি। অনেক জায়গায় বিক্ষোভ কেবল নামমাত্রই হয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ ব্যতিক্রম। বিজেপির দাবি, তৃণমূলের তোষণের রাজনীতির কারণেই এখানে বারবার হিংসার ঘটনা ঘটে চলেছে।
বিজেপির প্রতিক্রিয়া
বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন,'সারা দেশে ওয়াকফ আইন কার্যকর করা হবে। বাংলা দেশের বাইরে নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গকে জিহাদিদের হাতে তুলে দিয়েছেন। বিভিন্ন স্থানে হিন্দু মন্দির ভাঙচুর করা হচ্ছে, হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা করা হচ্ছে।
মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের রণনীতি
রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে 'বাত্তি গুল আন্দোলন'-এর পরিকল্পনা নিয়ে করেছে মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড। ১১ এপ্রিল ২০২৫ থেকে ৭ জুলাই ২০২৫ পর্যন্ত চলবে 'ওয়াকফ বাঁচাও অভিযান'। দিল্লির রামলীলা ময়দানে বিক্ষোভের পরিকল্পনা রয়েছে। ৩০ এপ্রিল রাত ৯টায় মুসলিমরা নিজেদের বাড়ি এবং কর্মস্থলে আধ ঘন্টা বিদ্যুৎ বন্ধ রেখে নীরব প্রতিবাদ জানাবেন।