• মেয়ের চাকরি পছন্দ নয়, বিয়ে দিয়ে ‘সব ঠিক করতে’ তরুণীর পায়ে শিকল বাবা-মায়ের, শোরগোল হাওড়ায়
    এই সময় | ১২ এপ্রিল ২০২৫
  • রোজগার করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন তরুণী। স্নাতকের দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশোনা করতে করতেই তিনি একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজে যোগ দেন। কিন্তু মেয়ের সেই অফিসে ‘গোলমালের’ গন্ধ পান বাবা-মা। তড়িঘড়ি মেয়ের বিয়ে দিয়ে ‘সব ঠিকঠাক’ করতে চেয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু বেঁকে বসেন মেয়ে। এর পরেই মেয়ের পায়ে শিকল পরিয়ে বাড়িতে বেঁধে রাখার অভিযোগ উঠল মা-বাবার বিরুদ্ধে। 

    ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর হাওড়ার ঘুসুড়িতে। শুক্রবার খবর পেয়ে ওই তরুণীকে উদ্ধার করে মালিপাচঘরা থানার পুলিশ। জানা গিয়েছে, ওই তরুণীর নাম আরতি সাউ। ১৯ বছরের এই তরুণী নিউ ব্যারাকপুরে একটি অনলাইন সেলস কোম্পানিতে চাকরি পান। পাশাপাশি সাবিত্রী মহাবিদ্যালয়ে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী তিনি। 

    আরতি সাউয়ের অভিযোগ, বাবা-মা তাঁর চাকরি করা পছন্দ করতেন না। কাজ করার ইচ্ছে প্রকাশ করলেই জুটত মারধর। শেষমেশ চাকরি বজায় রাখার জন্য বাড়ি ছেড়ে চলে যান তিনি। পরে আবার বাড়ি ফিরেও আসেন। অভিযোগ, সেই সময়েই তাঁকে বাবা-মা বাড়িতে ‘বন্দি’ করে রাখেন। এমনকী, তাঁর পায়ে শিকল পরানো হয় বলেও অভিযোগ করেছেন এই তরুণী। 

    যদিও আরতির বাবা গৌরা সাউ বলেন, ‘মেয়ে চাকরি করব বলে বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। আমরা চেয়েছিলাম মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিতে। ও যে সংস্থায় কাজ করছিল সেখানে সমস্যা রয়েছে। ওকে ভুল বোঝানো হচ্ছে। একাধিকবার ও বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে গিয়েছে। আমি আর আমার স্ত্রী দু’জনেই কাজে বেরিয়ে যাই। মেয়ে যাতে কোনও ভাবেই পালিয়ে না যায়, সেই জন্য শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছিলাম।’

    এ দিকে এ দিন আরতিকে বেঁধে রাখার অভিযোগ পেয়ে তাঁর বাড়িতে গিয়ে উদ্ধার করে পুলিশ। প্রথমে তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে চান বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে। তবে সেই অভিযোগ লেখার পরেই তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। শেষমেশ কোনও অভিযোগ দায়ের না করলেও আর নিজের বাড়িতে ফিরতে চাননি। সন্ধ্যায় তাঁর বাবা-মাকে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় এবং আরতিকে পাঠানো হয় ‘নিরাপদ আশ্রয়ে’। 

    ওই সংস্থার বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ রয়েছে। ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ। ওই সংস্থাটি ভুয়ো কি না বা সেখানে কোনও বেআইনি কাজ হয় কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। 

  • Link to this news (এই সময়)