কোচবিহারের মহামায়া কলোনি স্পোর্টিং ক্লাব ও কেটু সাধুর চড়কপুজো ৩৪ বছরে পড়ল
বর্তমান | ১২ এপ্রিল ২০২৫
রাজীব বর্মন, দেওয়ানহাট: প্রতিবছরের মতো এ বছরেও চৈত্র সংক্রান্তিতে মহামায়া কলোনি স্পোর্টিং ক্লাব ও কেটু সাধু চড়কপুজো কমিটির উদ্যোগে চড়কপুজো ও একদিনের মেলা হবে। কোচবিহার শহরের ক্যান্সার রোডের ধারে এই পুজো ও মেলা বেশ পুরনো। এ বছর চড়কপুজোর ৩৪ তম বর্ষ।
চড়কপুজো ও মেলাকে কেন্দ্র করে এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে এখন উৎসবের আবহ। এলাকার সিংহভাগ মানুষ এই পুজোর সঙ্গে জড়িত। নিষ্ঠার সঙ্গে পুজো করতে ১৫ দিন ধরে স্থানীয়রা নিরামিষ আহার করেন। এবারও তাঁরা নিরামিষ খাবার খাচ্ছেন। পুজো কমিটির সভাপতি হরিপদ চক্রবর্তী, সম্পাদক কৃষ্ণগোপাল শীল।
ফাল্গুন মাসে বসন্ত উৎসব চলে যাওয়ার পরপরই শুরু হয় বাংলা নববর্ষকে আগমন জানানোর পালা। প্রাচীন বাংলার লোককথার পরতে পরতে জড়িয়ে আছে গাজন বা চড়ক উৎসবের কাহিনি। চৈত্র মাসের শেষ দিন অর্থাৎ সংক্রান্তিতে হয় চড়কপুজো। পুজো উপলক্ষ্যে বসে মেলাও। মহাদেবকে উৎসর্গ করেই এই উৎসব পালন করা হয়ে থাকে।
পুজো কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ শনিবার চড়ক পুজোর ধূপতি চালান হবে। রবিবার রাতে হবে কালী হাজরা চালান। এরপর সোমবার চৈত্র সংক্রান্তিতে হবে চড়কের মূল পুজো। এ বছর ৪৫ জন চড়ক সন্ন্যাসী এই পুজো করছেন। চৈত্র মাসের ১৫ তারিখ সকালে শিব ও পার্বতীকে মন্দির থেকে নিয়ে গিয়ে নদীতে স্নান করিয়ে ঘটপুজো করা হয়েছে। এরপর সেখান থেকে শিব-পার্বতীকে নিয়ে এসে সাতিটি বাড়িতে মাগন নেওয়া হয়েছে। তারপর রাত্রে মন্দিরে ঘট ও ঠাকুরকে বসিয়ে পুজো করা হয়েছে।
পুজোর প্রধান পুরোহিত শ্যামলচন্দ্র দাস বলেন, প্রতিদিন সকালে ও রাতে নিয়ম মেনে পুজো চলছে। পুজোর সঙ্গে সারাসরি যুক্ত সন্ন্যাসীরা পাড়ায় ঘুরে ঘুরে মাগন সংগ্রহ করছেন। গোটা পুজোটাই হচ্ছে তান্ত্রিক মতে। এ বছর চড়কের গাছে তিনজনকে বড়শিতে ঘোরানো হবে।
এই চড়কপুজো কমিটির অন্যতম সদস্য লব দেবনাথ, আখিল দেবনাথ, রঞ্জিত সাহা। তাঁরা বলেন, ছোট থেকেই আমরা এই পুজোর সঙ্গে জড়িত। এই পুজোকে কেন্দ্র করে এলাকায় একটা উত্সবের আবহ তৈরি হয়। পুজো না হওয়া পর্যন্ত এলাকার সকলে নিরামিষ খাবার খান। পুজোকে ঘিরে খেলার মাঠে মেলা বসে। আমার চড়কপুজো আয়োজনের পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজসেবা মূলক কাজ করি। খেলাধুলোও সমানভাবে চালিয়ে যাই। নিয়মিত ফুটবল ও ক্রিকেট টুর্নামেন্টেরও আয়োজন করা হয়। নিজস্ব চিত্র