• কৃষকদের সুবিধা প্রদানে ২৪টি প্যাকস পুনরুজ্জীবিত করতে উদ্যোগী সমবায় দপ্তর
    বর্তমান | ১২ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: পুনরুজ্জীবনের উদ্যোগ! দীর্ঘ তিন দশক ধরে কোচবিহারে বন্ধ এক ডজন প্রাইমারি এগ্রিকালচারাল ক্রেডিট সোসাইটি বা প্রাথমিক কৃষি ঋণ সমিতি (প্যাকস) ফের সচল করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে খাতায়-কলমে থাকলেও বাস্তবে অস্তিত্ব নেই প্রায় তিন ডজন প্যাকসের। সেগুলিকে লিক্যুইডেশন বা ডি-রেজিস্ট্রেশনের পথে সমবায় দপ্তর। তারা ইতিমধ্যে এ ব্যাপারে সমবায় ব্যাঙ্কগুলির কাছে চিঠি পাঠিয়েছে। সমবায় দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, কৃষকদের সুবিধা প্রদান, নতুন ঋণদান সমিতি খোলা ও গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা করতেই এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। 

    রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তের মতো কোচবিহার জেলাতেও সমবায় ব্যবস্থা চাঙ্গা করতে তৎপর প্রশাসন। প্রায় পাঁচ মাস আগে তারা জেলায় সমীক্ষা চালিয়ে নিষ্ক্রিয় প্যাকসগুলি চিহ্নিত করে। প্রশাসন সূত্রে খবর, গত নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসের সমীক্ষা রিপোর্ট অনুসারে জেলায় নিষ্ক্রিয় প্যাকসের সংখ্যা প্রায় ৫৮টি। সেগুলির কোনওটি ১০, কোনওটি ২০, ২৫, আবার কোনওটি ৩০ বছরের পুরনো। সেগুলির একাংশ কোচবিহার স্টেট কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক, আরএকটি একাংশ জলপাইগুড়ি সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের অধীনে। বিভিন্ন কারণে সেগুলি বন্ধ। যারমধ্যে ২৪টি প্যাকসের হদিশ পাওয়া গিয়েছে। সেগুলিকে পুনরুজ্জীবিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। 

    কোচবিহার জেলা সমবায় দপ্তরের ডেপুটি রেজিস্ট্রার বা উপ নিবন্ধক সুবীর দত্ত বলেন, বর্তমানে জেলায় সচল প্যাকসের সংখ্যা ১২৩টি। সেগুলি রমরম করে চলছে। এর বাইরে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ ২৪টি প্যাকসের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ১২টি প্যাকস সচল করা হবে। এজন্য সেন্ট্রাল ও স্টেট কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে বাকি ১২টি সচল করা হবে। 

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অচল ওই প্যাকসগুলির মধ্যে কয়েকটি ব্যাঙ্ক ঋণ মেটায়নি বলে অভিযোগ। স্টেট ও সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সেগুলির অতীত ইতিহাস গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আইন অনুসারে কয়েকটির ঋণ মুকুবও করা হতে পারে। 

    এদিকে, সমবায় ব্যাঙ্কের খাতায়-কলমে থাকলেও বাস্তবে অস্তিত্ব নেই বেশ কিছু প্যাকসের। সেগুলির ঝাঁপ পুরোপুরি বন্ধ। সমবায় দপ্তর সূত্রে খবর, নিষ্ক্রিয় প্যাকসের মধ্যে ৩৪টির কোনও খোঁজই পাওয়া যায়নি। বর্তমানে গ্রামবাসীরাও সেগুলির সম্পর্কে কোনও কিছু জানাতে পারছেন না। সেগুলির সদস্য ও পদাধিকারীকদেরও হদিশ নেই। অনেক পদাধিকারী ও সদস্য মৃত। সেগুলির জায়গায় নতুন করে কৃষি ঋণ সমবায় সমিতি চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এজন্য সমবায় আইন অনুসারে সেগুলিকে লিক্যুইডেশন বা ডি-রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। তা না হলে নতুন করে সমিতি এলাকাগুলিতে খোলা সম্ভব নয়। 

    কোচবিহার জেলা সমবায় দপ্তরের ডেপুটি রেজিস্ট্রার বলেন, খোঁজ না মেলা ওই ৩৪টি প্যাকসের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ১৬টি লিক্যুইডেশন করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ ব্যাপারে ব্যাঙ্কের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। কৃষকদের সুবিধার্থে সেই জায়গায় নতুন সমিতি খোলা হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)