• মন্ত্রীর প্রশ্নের মুখে পড়ে ‘বাংলার বাড়ি’ নিয়ে তৎপর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি
    বর্তমান | ১২ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: পঞ্চায়েতমন্ত্রীর প্রশ্নের মুখে পড়ে অবশেষে ‘বাংলার বাড়ি’ নিয়ে তৎপর হলেন জলপাইগুড়ি সদরের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিনয় রায়। জেলা প্রশাসনের রিপোর্ট বলছে, সদরে দু’শোরও বেশি উপভোক্তা এখনও বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করেননি। ওই তথ্য তুলে ধরে বৃহস্পতিবার রিভিউ মিটিংয়ে জলপাইগুড়ি সদর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির কাছে কৈফিয়ত চান পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। 

    জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাংলার বাড়ি মিলেছে জলপাইগুড়ি সদর ব্লকে। সংখ্যাটা ১০ হাজারেরও বেশি। এ প্রসঙ্গ টেনে মন্ত্রী জানতে চান, বেশি বাড়ি পেয়েছেন বলে কি কাজ শুরু হতে দেরি হচ্ছে? এতজন উপভোক্তা কেন এখনও বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করেননি? অন্য ব্লকের চেয়ে জলপাইগুড়ি সদরে কেন বাংলার বাড়ি তৈরির কাজ পিছিয়ে রয়েছে? মেটেলি পঞ্চায়েত এলাকাতেও বাংলার বাড়ি তৈরির কাজ খানিকটা পিছিয়ে থাকায় রাজ্য প্রশাসনের তরফে তাদেরও কাজে গতি আনতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

    মন্ত্রীর ওই প্রশ্নের মুখে সদরের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিনয় রায় বলেছিলেন, অনেক উপভোক্তাই বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছেন। হয়তো পোর্টালে সবটা এখনও আপলোড করা সম্ভব হয়নি। তাছাড়া বেরুবাড়ি সীমান্তে বাংলার বাড়ি তৈরি নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছিল। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সেই সমস্যা কাটানো গিয়েছে। ওই এলাকাতেও যেসব বাড়ি তৈরির কাজ আটকে ছিল, সেগুলিও দ্রুত শুরু করা হবে। 

    এদিকে, বাংলার বাড়ি নিয়ে পঞ্চায়েতমন্ত্রীর প্রশ্নের মুখে পড়তে হওয়ায় শুক্রবার থেকে এ বিষয়ে তৎপর হন সদর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। যেসব উপভোক্তা প্রথম কিস্তির টাকা পাওয়ার পরও এখনও বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করেননি, তাঁদের চিহ্নিত করে নিজে হানা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। এদিন বিনয়বাবু বলেন, ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানতে পেরেছি, ১৮৫ জন উপভোক্তা প্রথম কিস্তির টাকা পাওয়ার পরও এখনও পর্যন্ত বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করেননি। তাঁদের নাম, ঠিকানা চেয়েছি। বাংলা নববর্ষ মিটলেই ওসব উপভোক্তার বাড়িতে যাব। দ্রুত যাতে তাঁরা বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করেন, সেই বিষয়ে তাঁদের বলব। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য এবং প্রধানদেরও বিষয়টি নিয়ে তৎপর হতে বলেছি। বেরুবাড়ি সীমান্তে বিএসএফের বাধায় ১৪ জন উপভোক্তা বাংলার বাড়ি তৈরি করতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছিলেন। জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ওই সমস্যা মিটে গিয়েছে। 

    সদর ব্লকের অরবিন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রাজেশ মণ্ডলের অবশ্য দাবি, আমার পঞ্চায়েতে বাংলার বাড়ি প্রকল্পে ৪৮২টি ঘর এসেছে। এর মধ্যে ২৬টি ঘর তৈরির কাজ শুরু হয়নি। যদিও তাদের মধ্যে দু’জন উপভোক্তা ছাড়া বাকিরা নির্মাণ সামগ্রী কিনে ফেলেছেন। শীঘ্রই কাজ শুরু করবেন। এই তথ্য তুলে ধরার পাশাপাশি রিভিউ বৈঠকে অরবিন্দ পঞ্চায়েতের প্রধান বাংলার বাড়ি প্রকল্পে উত্তরবঙ্গের জন্য পঞ্চায়েতমন্ত্রীর কাছে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা দেওয়ার দিন এগিয়ে নিয়ে আসার আবেদন জানান। বলেন, আমাদের এখানে তাড়াতাড়ি বর্ষা চলে আসে। বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলে ঘর তৈরির কাজ বন্ধ হয়ে যাবে। তাছাড়া যেসব পরিবারের থাকার জন্য অন্য কোনও ঘর নেই, তারা চরম সমস্যায় পড়বে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী।  
  • Link to this news (বর্তমান)