টাকা না পেয়ে নবদ্বীপের সমবায় ব্যাঙ্কের সামনে গ্রাহকদের বিক্ষোভ
বর্তমান | ১২ এপ্রিল ২০২৫
সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: নবদ্বীপের প্রাচীন মায়াপুরের নিদয়া সমবায় কৃষি ইউনিয়ন সমিতি লিমিটেড ব্যাঙ্ক থেকে টাকা না পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা। শুক্রবার দুপুরে তাঁরা বন্ধ ব্যাঙ্কের সামনে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখান। ঘটনায় প্রাচীন মায়াপুরের রুদ্রপাড়া এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। গ্রাহকরা জানান, গোষ্ঠীর লোন পরিশোধ হলেও ওই ব্যাঙ্ক থেকে তাঁরা নতুন করে লোন পাচ্ছেন না। গত কয়েক মাস ধরে ব্যাঙ্ক থেকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, বিধবা ভাতা ও বার্ধক্যভাতার টাকা পেতেও গ্রাহকদের হয়রান হতে হচ্ছিল। এই অভিযোগে ব্যাঙ্কের ম্যানেজারের ছেলেকে আটকে রাখা হয়। নবদ্বীপ থানার পুলিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে। পরে ম্যানেজারের ছেলেকে তারা উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি।
গঙ্গানগরের বাসিন্দা শিউলি দত্ত বলেন, আমার মা বন্দনা দত্ত এই ব্যাঙ্ক থেকেই লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা পেতেন। কয়েক মাস ধরে সেই টাকা ঠিকমতো পাচ্ছিলেন না। ব্যাঙ্কের তরফে বলা হয়েছিল, আজ দুপুরে মিটিং হবে। কিন্তু এখানে এসে দেখি, কেউ নেই।
স্থানীয় বধূ সুজাতা দাস বলেন, পাঁচ মাস ধরে এই ব্যাঙ্কে আমার লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা আসছে। কিন্তু ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ তিন মাস ধরে ঘোরাচ্ছে। আমরা দু’-তিন মাসের টাকা জমলে তবেই তুলি।
প্রতাপনগরের বাসিন্দা বৃদ্ধা আরতি শর্মা বলেন, এই ব্যাঙ্কে আমার বউমা সুমনা শর্মার ৮০ হাজার টাকা রয়েছে। ক’দিন ধরেই বউমার পাসবই আপডেট করতে এসে দেখছি ব্যাঙ্ক বন্ধ। শুনেছি, এই ব্যাঙ্কের ম্যানেজার নাকি অসুস্থ। ওঁর ছেলে এই ব্যাঙ্কের ক্যাশিয়ার।
স্থানীয় বাসিন্দা শিখা পাল বলেন, প্রতাপনগর লিঙ্ক রোডে আমাদের ১০জনের একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠী রয়েছে। ব্যাঙ্কে আমাদের ৬৮ হাজার টাকা জমেছে। প্রতি মাসে আমরা ১০জন মিলে হাজার টাকা করে রাখি। আমরা প্রথম এবং দ্বিতীয় বছর লোন পাই যথাক্রমে ১০ ও ২০ হাজার টাকা। যথাযথ লোন পরিশোধও করি। আজ আমাদের পুনরায় লোন দেওয়ার কথা ছিল। প্রতিদিনই ঘোরাচ্ছে। এভাবে ছ’মাস চলছে। এছাড়াও, আমার কিছু টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করা আছে। এখানে অনেক গ্রাহক আছে। আমরা চাইছি সকলের টাকা ফেরত দেওয়া হোক।
এদিন দেখা যায় ওই ব্যাঙ্কের দেওয়ালে পুরসভার তরফে একটি ব্যানার লাগানো রয়েছে। তাতে লেখা, সমস্ত আমানতকারীর অর্থ, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, বিধবা ভাতা, বৃদ্ধ ভাতা গ্রাহকদের পরিশোধ না করা পর্যন্ত ব্যাঙ্কের কোনও সম্পত্তি বিক্রয় করা যাবে না। নিজস্ব চিত্র