• আসানসোলে প্রতিবেশীকে কুপিয়ে খুন করায় যাবজ্জীবন অভিযুক্তের
    বর্তমান | ১২ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: তিন বছরের মধ্যে আসানসোলে হাড়হিম করা হত্যাকাণ্ডের বিচার শেষ হল। সামান্য জল নিয়ে বিবাদ। তাতেই প্রকাশ্য দিবালোকে প্রতিবেশী ফজলে ‌ইমামকে কুপিয়ে খুন করেছিল হীরাপুর থানার রহমতনগরের বাসিন্দা মহম্মদ আলি ওরফে সোনু। চাবি মোড়ে এই হত্যকাণ্ড স্তম্ভিত করে দিয়েছিল হীরাপুর থানার বাসিন্দাদের। ঘটনার তিন বছর পরে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পেল অপরাধী। প্রতিবেশীকে নৃশংসভাবে খুনের দায়ে মহম্মদ আলিকে যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা দিলেন আসানসোল আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক সঞ্জীত আমবস্তা। বিচার পেয়ে খুশি নিহতের পরিবারের সদস্যরা। 

    সরকারি আইনজীবী বিনয়ানন্দ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ২২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছিল এই মামলায়। সাক্ষী দিয়েছিলেন মৃতের মাও। তিন বছরের মধ্যেই বিচার শেষ হওয়া আমাদের বিচার ব্যবস্থার দক্ষতাকেই প্রমাণ করে। পরিবারের লোকজন আমাদের সাধুবাদ দিয়েছেন। 

    ২০২২ সালের ১৮ জানুয়ারি জমজমাট চাবি মোড়ে সবকিছু‌ই স্বাভাবিক ছিল। সেই সময়েই এক ব্যক্তিকে আর এক ব্যক্তির পেটে ভোজালির কোপ মারতে দেখা যায়। পেটে কোপ মারার পর ভোজালি দিয়ে গলাও কেটে দেয় দুষ্কৃতী। খুন করার পর রক্তাক্ত ভোজালি দেখিয়ে একজনের স্কুটি ছিনিয়ে নিয়ে চম্পট দেয় মহম্মদ আলি। ক্ষতবিক্ষত ফজলে ‌ইমামকে নিয়ে আসানসোল জেলা হাসপাতাল নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার সময়ে ফজলে ইমামের মা মহাজবিন খাতুন ওখানেই উপস্থিত ছিলেন। ছেলের হত্যা দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে যান মৃতের মা। পরে পুলিস অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে। পুলিস দ্রুত অভিযুক্তর বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়। প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে সাক্ষী দেন মৃতের মা সহ তিনজন। জেলবন্দি অবস্থাতেই বৃহস্পতিবার বিচারক অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেন। 

    এদিন অপরাধীর সাজা ঘোষণা হয়। 

    ঘটনার পর এলাকায় গিয়ে জানা গিয়েছিল, পানীয় জল নিয়ে টানাপোড়েনের জেরেই এই ভয়ঙ্কর ঘটনা। মহম্মদ আলি ও ফজলে ইমামদের পাশাপাশি বাড়ি। দীর্ঘদিন ধরেই এক টুকরো জমি নিয়ে টানাপোড়েন চলছিল দু’টি পরিবারের মধ্যে। তারপর তাদের মধ্যে বিবাদ চরমে ওঠে পানীয় জল নেওয়াকে কেন্দ্র করে। অভিযোগ, ঘটনার দু’দিন আগেই মহম্মদ আলি ফজলে ইমামকে প্রাণে মারার হুঁশিয়ারি দেন। ফজলে ইমামদের পরিবার বিষয়টিতে গুরুত্ব দেয়নি। তাই ১৮ জানুয়ারিও বাড়ির কাছে চাবি মোড়ে বসেছিলেন ফজলে আলম। তাঁর মাও কাছেই ছিলেন। তখনই ভোজালি নিয়ে আক্রমণ করে মহম্মদ আলি। মৃতের মা মহাজবিন খাতুন বলেন, দোষীর শাস্তি হওয়ায় আমরা খুশি।
  • Link to this news (বর্তমান)