বেহাল রাস্তায় ভোগান্তি হামেশাই ঘটে চলেছে দুর্ঘটনা
বর্তমান | ১২ এপ্রিল ২০২৫
সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: নবদ্বীপ ব্লকের ফকিরডাঙা-ঘোলাপাড়া থেকে শান্তিপুরের সগুনা পঞ্চায়েতের বেলের মাঠ পর্যন্ত রাস্তা বেহাল অবস্থায় রয়েছে। ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। ভাঙা রাস্তার জন্য দুর্ঘটনা বাড়ছে। কিন্তু জেলা প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই। নবদ্বীপ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি তাপস ঘোষ বারবার আবেদন জানিয়েও কিছু করতে পারেননি। এখন রাস্তা মেরামত করতে তিনি আন্দোলনে নামতে চাইছেন।প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রকল্পে প্রায় সাড়ে আট কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে দু’-আড়াই কিলোমিটার রাস্তা সম্পূর্ণ বেহাল। এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করেন ফকিরডাঙা-ঘোলাপাড়া পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা। এমনকী, শান্তিপুরের বিস্তীর্ণ এলাকার গ্রামবাসীরা এই রাস্তা ধরে গিয়ে ভাগীরথী পেরিয়ে পূর্ব বর্ধমানের সমুদ্রগড়ে যাতায়াত করেন। আবার কেউ এই রাস্তা দিয়ে ভালুকা হয়ে নবদ্বীপ বা কৃষ্ণনগরে যান। নবদ্বীপ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তাপস ঘোষ বলেন, রাস্তাটি কেন্দ্রীয় সরকারের পিএমজিএসওয়াই প্রকল্পের অধীন। এত বড় রাস্তা পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতির সারানোর ক্ষমতা নেই। তবে, সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বারবার যাচ্ছি। বারবার আবেদন করছি। কিন্তু, কেউই কোনও কথায় কর্ণপাত করছে না। বিডিওর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে মৌখিক ও লিখিতভাবে জানিয়েও কোনও লাভ হচ্ছে না। এবার আন্দোলনের পথেই যেতে হবে। তাছাড়া, কোনও উপায় নেই। ফকিরডাঙা-ঘোলাপাড়া পঞ্চায়েতের প্রধান সাজদা পারভিন বিবি বলেন, ১৫বছর আগে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রকল্পে এই পিচ রাস্তাটি তৈরি হয়েছিল। দু’বছর আগে কোনওরকমভাবে মেরামত করা হয়েছিল। এই রাস্তাটি দিয়ে অনেকেই শান্তিপুর, ভালুকা, কিংবা নদী পার হয়ে পূর্ব বর্ধমানের সমুদ্রগড়ে যাতায়াত করেন। গ্রামের অধিকাংশ পড়ুয়া এই রাস্তা ধরে ফকিরডাঙা হাইস্কুল, বাহিরচড়া জুনিয়র হাইস্কুল এবং অন্যান্য প্রাইমারি স্কুলে যায়। কিন্তু বৃষ্টি হলেই অনেক জায়গায় জল জমে। প্রতিদিন রাস্তাটি দিয়ে ২৫-৩০ হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। বিষয়টি বিডিওকে জানানো হয়েছে। জেলা পরিষদ থেকেও মাপজোক করে গিয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও কাজ হয়নি। এই রাস্তা দিয়ে বাসিন্দারা নবদ্বীপ ব্লক অফিস, পঞ্চায়েত অফিস, মহেশগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতাল, বিষ্ণুপুর হাসপাতাল, এমনকী, নবদ্বীপ বা কৃষ্ণনগর হাসপাতাল যান। পঞ্চায়েতের অধিকাংশ মানুষ নদী পার হয়ে এই রাস্তা দিয়ে নবদ্বীপে আসেন। গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটির অবস্থা খুবই ভয়াবহ। এমনকী, জল জমে গেলে সাইকেল, টোটো, বাইকের চাকার বেশ কিছুটা অংশ ডুবে যায়। এই রাস্তার কারণে মাঝেমধ্যেই ছোটখাট যানবাহন উল্টে যাচ্ছে। প্রায়ই দুর্ঘটনার সম্মুখীন হচ্ছেন এলাকার মানুষজন। বাহিরচড়া ঘোষপাড়ার বাসিন্দা দুর্যোধন ঘোষ বলেন, আমার মুদিখানার দোকান রয়েছে। গ্রামের মানুষজন দোকানে কেনাকাটা করতে আসতে পারেন না। এলাকার চাষিরা সব্জি নিয়ে বাজারে যেতেও সমস্যায় পড়তে হয়। ফকিরডাঙা হাইস্কুলের ছাত্রী জেসমিনা খাতুন বলে, আমাদের স্কুলে যেতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। একটু বৃষ্টি হলেই জল-কাদার নীচে কোথায় গর্ত আছে, বোঝা যায় না। অনেকেই পড়ে যায়। এই রাস্তা দ্রুত মেরামত করা উচিত।