সুপ্রকাশ চক্রবর্তী, হাওড়া
বেলগাছিয়া ভাগাড়ের দুই জঞ্জালের পাহাড়ের মাঝখান দিয়ে চলে গিয়েছে উত্তর হাওড়ার প্রধান নিকাশি নালা বেলগাছিয়া পচা খাল। ভাগাড়ের জঞ্জালের ধস নেমে যাতে সেই নিকাশি নালা বুজে না যায়, সেই জন্য দেওয়া হয়েছিল বড় বড় শাল বল্লার প্রাচীর। কিন্তু জঞ্জালের ধসে সেই প্রাচীর সম্পূর্ণভাবে ভেঙে গিয়ে নিকাশি নালার বেশ কিছুটা অংশ বুজে যায়।
হাওড়া পুরসভার সহযোগিতায় নতুন করে সেই নালা খননের কাজ শুরু করেছে কেএমডিএ। ভাগাড়ের বিপজ্জনক যে অংশটি ঝুলে রয়েছে, সেখানে ফের ধসের বিপদ ঠেকাতে এ বার বাঁশ বা শাল বল্লার বেড়া না দিয়ে বড় বড় লোহার শিট বা থাম পুঁতে বেড়া তৈরি করা হচ্ছে। সেই লোহার থাম কম্প্রেসার মেশিন দিয়ে মাটির গভীরে পুঁতে ফেলা হচ্ছে, যাতে ভাগাড়ে ধস নামলেও এই লোহার বেড়া জঞ্জালের চাপ নিতে পারে।
হাওড়া পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারম্যান সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘লোহার শিট দিয়ে পাইলিং করা হচ্ছে যাতে ফের ভাগাড়ে ধস নেমে এই নালা বুজে না যায়। এই কাজ অনেকটা শেষের পথে। দ্রুত ওই পুরনো লাইনে নিকাশি ব্যবস্থা চালু হয়ে যাবে।’ ভাগাড়ে জঞ্জালের সমস্যা সমাধানে যাতে প্রতিদিন বায়োমাইনিংয়ের মাধ্যমে ৫২০ মেট্রিক টন করে জঞ্জাল কমানো যায়, সেই ব্যাপারে নতুন সংস্থাকে বরাত দেওয়ার জন্যে ইতিমধ্যেই টেন্ডার করেছে কেএমডিএ।
নতুন করে বায়োমাইনিং শুরু হলে প্রাথমিকভাবে ঝুলে থাকা জঞ্জালকে সরানো হবে। পরে আস্তে আস্তে দুটো পাহাড়েই জমে থাকা জঞ্জাল সরিয়ে ওই জায়গাটিকে আবার পুনর্ব্যবহার যোগ্য করে তোলা হবে বলে কেএমডিএ সূত্রে জানা গেছে। এই জন্য একটি নতুন ওয়ে ব্রিজও তৈরি করা হবে এখানে।
হাওড়া পুরসভার এক আধিকারিক বলেন, ‘বর্তমানে একটি কোম্পানি বায়োমাইনিং এর কাজ করছে। কিন্তু এই দুর্ঘটনার পর যাতে বায়োমাইনিংয়ের কাজ বাড়ানো যায় সেই পরিকল্পনা নিয়েছে কেএমডিএ।’ আগে যে ওয়ে ব্রিজটি ছিল সেটি খারাপ হয়ে গিয়েছিল। তাই কিছুদিন আগেই নতুন একটি ওয়ে ব্রিজ তৈরি করার পরিকল্পনা নিয়েছিল হাওড়া পুরসভা। তারপর সেখানে ধস নেমে সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি। এখন নতুন সংস্থা বায়োমাইনিং এর কাজ শুরু করলে প্রথমেই দ্রুত ওয়ে ব্রিজটি তৈরি করা হবে। যাতে প্রতিদিন ৫২০ মেট্রিক টন জঞ্জাল বায়োমাইনিং করার পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হতে পারে।
এ দিকে বর্তমানে যে নিকাশি নালাটি পুনরায় তৈরি করার কাজ চলছে সেটি শেষ না হওয়ায় বেশ কিছু জায়গায় জল জমে রয়েছে এখনও। তবে রানি ঝিলের আশপাশের যে জমা জল এফ রোডের দিকে নতুন একটি নালা কেটে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে পুরসভা। এই নতুন বেলগাছিয়া পচা খাল ফের চালু হলে ভাগাড় এলাকায় জমা জলের সমস্যা তো মিটবেই, বর্ষাতেও জমা জলের সমস্যায় ভুগতে হবে না বলে দাবি করেছেন সুজয়।