• ‘জ্বালিয়ে দেওয়া’ মন্তব্য, নয়া বিতর্কে শাসক ও বিরোধী
    আনন্দবাজার | ১২ এপ্রিল ২০২৫
  • কসবায় ডিআই দফতরের সামনে গোলমালের ঘটনা ঘিরে পুলিশ বনাম আন্দোলনকারী চাপানউতোরের মধ্যেই এ বার যোগ হল রাজনৈতিক পরিচয়ের বিতর্ক। চাকরিহারা শিক্ষকদের উপরে পুলিশের লাথি-লাঠি চালানো নিয়ে সরব হয়েছে সব বিরোধী দল। কলকাতা পুলিশ পাল্টা একটি ভিডিয়ো সামনে এনেছে, যেখানে এক জন বলছেন, ‘পেট্রল নিয়ে আয়, জ্বালিয়ে দেব’! সেই ভিডিয়োকে হাতিয়ার করেই এ বার বিজেপির বক্তব্য, প্রতাপ রায়চৌধুরী নামে যিনি ওই কথা বলেছিলেন, তিনি তৃণমূল কংগ্রেসেরই লোক। যদিও প্রতাপের দাবি, তিনি চাকরি হারিয়ে নিজেদের গায়ে আগুন দেওয়ার কথা বলেছিলেন। বিজেপির প্রচারে আমল না দিয়ে তৃণমূল আবার বলেছে, প্রতাপ সিপিএমের ক্যাডার!

    কসবার ঘটনার নেপথ্যে সিপিএম-বিজেপির বিরুদ্ধে ‘ইন্ধনে’র অভিযোগ তুলেছিল তৃণমূল। তাদের বক্তব্য ছিল, অন্যত্র আন্দোলন হলেও কসবা ছাড়া কোথাও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি হয়নি। আন্দোলনকারীদের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে কলকাতা পুলিশ তাদের বক্তব্যের সমর্থনে একটি ভিডিয়ো সামনে এনেছিল। আর সেখানেই ওই বিতর্কিত মন্তব্যের দিকে ইঙ্গিত করে বিজেপির আইনজীবী নেতা তরুণজ্যোতি তিওয়ারি শুক্রবার প্রশ্ন তুলেছেন, “ছেলেটা তো তৃণমূলের। চাকরি যাওয়ার পরে তৃণমূলকে দোষ না দিয়ে বিরোধীদের দোষ খুঁজছিল। শিক্ষকদের আন্দোলনে গিয়ে পেট্রল নিয়ে এসে জ্বালিয়ে দেওয়ার কথা বলল কেন? শিক্ষকদের আন্দোলনকে কলুষিত করতে?” যাঁকে নিয়ে এমন প্রশ্ন, সেই প্রতাপ যদিও জানিয়েছেন, ‘যন্ত্রণা’র জন্যই তাঁর ওই অভিব্যক্তি। তাঁর বক্তব্য, “নিজেদের জ্বালিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিলাম। অন্য কিছু নয়। কী ভাবে সংসার চলবে, কোনও পথ নেই।”

    তবে প্রতাপকে এ দিন আবার সিপিএমের কর্মী বলে দাবি করে পাল্টা সরব হয়েছে তৃণমূল। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের দাবি, “যিনি ওই কথা বলছেন, তিনি সিপিএমের ক্যাডার। ফেসবুকে মহম্মদ সেলিমের প্রশংসা ওঁর বক্তব্য দেখলেই তা স্পষ্ট হবে।” তাঁর সংযোজন, “জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের সময়ে কলতান দাশগুপ্তের অডিয়ো ক্লিপে যে হিংসা ছড়ানোর চক্রান্ত ধরা পড়েছিল, এখানেও সিপিএম একই ভাবে অশান্তি করতে চেয়েছিল।” তৃণমূলের বক্তব্যে আমল দেয়নি সিপিএম। দলের রাজ্য কমিটির সদস্য সৃজন ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “তৃণমূল নিজেদেরই লোক ঢুকিয়ে আন্দোলনকে নষ্ট করতে চাইছে। অথবা, এটাও হতে পারে, তৃণমূলের চুরির ফল ভুগতে হচ্ছে তাদেরই সমর্থকদের।” রাজ্যে ২০২১ সালে তৃণমূল তৃতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরে সোনারপুরের ওই শিক্ষকের সমাজমাধ্যমে উচ্ছ্বাসমূলক নানা পোস্টের কথাও শাসক দলকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে বিজেপি ও সিপিএম। দুর্নীতির অভিযোগে এ দিনই এসএসসি ভবন-অভিযান করেছিল বিজেপির যুব মোর্চা। তবে এসএসসি ভবনের অনেক আগেই পুলিশ ব্যারিকেড করেছিল। দু’টি ব্যারিকেড ভাঙার পরে তৃতীয় ব্যারিকেডের সামনে পুলিশ মোর্চার নেতা-কর্মীদের আটকায়। মোর্চার রাজ্য সভাপতি ইন্দ্রনীল খাঁ, বিজেপি নেতা তমোঘ্ন ঘোষ প্রমুখ রাস্তায় বসে বিক্ষোভ শুরু করেন। কিছু ক্ষণ পরে পুলিশ বিক্ষোভ তুলে দেয়।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)