কিছু টাকার লোভে তরুণ প্রজন্মকে রাস্তায় বসাচ্ছেন নেতা-মন্ত্রীরা। শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস হচ্ছে, শিল্প হচ্ছে না, কর্মসংস্থানের সুরাহা নেই। এই সার্বিক অনাচারের প্রতিবাদ জানাতে আগামী ২০ এপ্রিল ব্রিগেড সমাবেশে যুব প্রজন্মকে উপস্থিত থাকার ডাক দিল ডিওয়াইএফআই। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং যুব সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় শুক্রবার ওই আবেদন জানাতে গিয়ে বলেছেন, ‘‘দোষ সরকার করেছে, টাকা নিয়ে চাকরি বিক্রি করেছে। আর শাস্তি পাচ্ছে যোগ্য চাকরিহারারা। রাস্তায় দাঁড়িয়ে মারধর খেয়ে দাবি আদায় করতে হবে, এটা ওঁদের প্রাপ্য? এর জবাব চাইতে হবে।’’ মীনাক্ষীদের বক্তব্য, সেই ২০১৬ সালের এসএসসি-তে ২২ লক্ষ ছেলেমেয়ে পরীক্ষা দিয়েছিলেন এবং তার মধ্যে ২১ লক্ষ ৭৪ হাজার বাতিল হয়েছিলেন। কোন মাপকাঠিতে ২৬ হাজার ছেলেমেয়ে চাকরি পেয়েছিলেন, তার তথ্য সরকারকেই আদালতে দিতে হবে। বিরোধী এবং মামলাকারী পক্ষের আইনজীবীদের ঘাড়ে ধোষ চাপিয়ে লাভ নেই।
ডিওয়াইএফআই রাজ্য নেতৃত্বের তরফে মীনাক্ষী, রাজ্য সভাপতি ধ্রুবজ্যোতি সাহার দাবি, স্বচ্ছতার সঙ্গে নিয়োগের দাবিতে বাম যুব ও ছাত্রেরা রাস্তায় থেকেছে। নবান্ন অভিযান করতে গিয়ে পুলিশের মারে মইদুল মিদ্যার প্রাণ গিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক রায়ের পরে ‘যোগ্য’দের চাকরি বাঁচানো এবং দুর্নীতিগ্রস্তদের শাস্তির দাবিতে ফের পথে নেমেই আন্দোলন চলবে বলে তাঁরা জানিয়েছেন। মীনাক্ষীর মন্তব্য, ‘‘আজ যারা সরকারে, তারা জলে আগুন লাগানো নেতা-নেত্রী! তাদের মুখে ‘অযোগ্য’দের কথা উঠছে যেন? তার মানে ‘অযোগ্য’ ছিল! আমি সাদা খাতা দিলে তুমি পাশ করালে কী স্বার্থে? কেউ ঘুষের টাকা নিয়ে গেলে সেটা নেওয়ার লোক ছিল।’’
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও নাম না-করে নিশানা করেছেন সিপিএমের যুব নেত্রী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিজেপির নেতা অনেক কথা বলছেন। তুমি তো ২০১৬ সালে ঘুরে বেড়াতে আঁচল ধরে! জেলায় গেলে শুনতে পাওয়া যায়, মালদহ-মুর্শিদাবাদ কার দায়িত্ব ছিল টাকা তোলার।’’ শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির প্রসঙ্গে শুভেন্দুর নামে মালদহের মোথাবাড়িতে পোস্টার লাগানো হয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের তরফেও। ‘২০১৬ সালে মালদহে শিক্ষক নিয়োগে অযোগ্যদের তালিকা শুভেন্দুকেই দিতে হবে’— এমনই লেখা হয়েছে পোস্টারে। সেই সময়ে শুভেন্দু মালদহে তৃণমূলের পর্যবেক্ষক ছিলেন। সপ্তাহ দুয়েক আগে একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে মোথাবাড়ি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। কলকাতা হাই কোর্টের অনুমতি নিয়ে এ দিন মোথাবাড়িতে গিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা। যদিও পুরনো অভিযোগ ও পোস্টার প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে মন্তব্য করেননি তিনি।