• রিপোর্ট চেয়েও রিটনের পাশেই এখন লালবাজার, কেন ‘ক্লোজ়’ নয়, উঠছে প্রশ্ন
    এই সময় | ১২ এপ্রিল ২০২৫
  • এই সময়: আইন–শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে একজন শিক্ষককে কেন লাথি মারলেন ডিউটিরত এক পুলিশকর্মী? গত বুধবার কসবায় ডিআই অফিসে চাকরিহারা শিক্ষকদের প্রতিবাদ কর্মসূচি চলাকালীন সাব ইনস্পেক্টর রিটন দাস ঠিক কোন পরিস্থিতিতে লাথি মারলেন এবং এ রকম একটা গুরুতর অভিযোগ ওঠার পরেও তাঁকে কেন ‘ক্লোজ়’ করা হলো না— ৪৮ ঘণ্টা পরেও তার সঠিক উত্তর মিলল না লালবাজারের কাছ থেকে।

    পুলিশ সূত্রের খবর, রিটনের বয়ান ইতিমধ্যেই নথিভুক্ত করা হয়েছে বিভাগীয় ডিসির কাছে। তদন্তের স্বার্থে তাঁকে ‘ক্লোজ়’ করার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে। তবে তার আগে এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা কার্যত রিপনের পাশেই দাঁড়িয়েছেন।

    সিপি বলেন, ‘যাঁর বিরুদ্ধে কথা হচ্ছে, সেই রিটন দাসকেও মারধর করা হয়েছিল। তাঁর বুকে, কানে লেগেছে। তাঁকে চড়ও মারা হয়েছে। এমনকী, চশমা ভাঙা হয়েছে।’ তাঁর সংযোজন, ‘আমি বাহিনীকে হেড করছি। পুলি‌শকে কেউ হেনস্থা করবে, তা মেনে নেওয়া যায় না। কেন লাথি মারতে গেলেন রিটন, তারও অনুসন্ধান চলছে।’ ঘটনাচক্রে বুধবার কসবার ঘটনার পরে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে সিপি ছ’জন পুলিশকর্মীর আহত হওয়ার কথা বলেছিলেন। এটাও বলেছিলেন, যে ছবি (লাথি মারার) সামনে এসেছে, তা কাম্য নয়।

    তবে বিতর্ক কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না রিটন দাসের। ‘লাথি’ মারা ওই এসআই–কে কেন কসবার ঘটনার তদন্তকারী অফিসার (আইও) করা হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন শিক্ষক–শিক্ষিকাদের একাংশ। তাঁরা বলেন, ‘যে রক্ষক, সে–ই আবার ভক্ষক। এটা কী ভাবে হয়?’

    এ বিষয়ে সিপিকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘কলকাতা পুলিশের থানার সিস্টেম নিয়ে আপনারা অবগত রয়েছেন কি না, জানা নেই। রিটন ডিউটি অফিসার ছিলেন। যিনি কেস রেকর্ড করেন, অর্থাৎ এফআইআর করেন সাধারণত প্রাথমিক ভাবে তিনিই আইও হয়ে থাকেন। উনি এই ঘটনায় আইও ছিলেন না।’

    সূত্রের খবর, কসবার ঘটনায় তদন্তকারী অফিসারের দায়িত্বে রয়েছেন সঞ্জয় সিং। তিনি এই ঘটনার তদন্ত করে বিভাগীয় ডিসি (দক্ষিণ শহরতলি) বিদিশা কলিতাকে রিপোর্ট দেবেন। সেই রিপোর্ট পৌঁছবে সিপির টেবিলে। কসবার তদন্ত নিয়ে এ দিন মনোজ ভার্মা বলেন, ‘তদন্ত চলছে। সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

    রিটনের বিরুদ্ধে কোনও বিভাগীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে কি না, সেই প্রশ্নের সঠিক জবাব অবশ্য মেলেনি। সিপি বলেন, ‘খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ পুলিশ সূত্রে খবর, কসবার ঘটনায় ৮টি ধারায় মোট দু’টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার মধ্যে তিনটি ধারা জামিন অযোগ্য। একটি মামলা স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে দায়ের করে পুলিশ। অন্যটি দায়ের করেন স্কুল পরিদর্শক (ডিআই)।

    পুলিশের আচরণ নিয়ে এ দিনও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষামহল এবং সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। এ বিষয়ে সিপি–কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘লাথি মারা উচিত হয়নি। আগেও বলেছি, আমি আবার বলছি, এমন ঘটনা অভিপ্রেত নয়। পুলিশের ভুল হতেই পারে। যাতে এমন ঘটনা বার বার না হয়, সে কারণে প্রতি সপ্তাহে আমরা দু’দিন করে আলোচনা করি। কী ভাবে থানায় ডিউটি করতে হবে, তা বলা হয়।’

  • Link to this news (এই সময়)