• কড়া রোদই দাওয়াই আফ্রিকান বিটলের, দাবি বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের
    এই সময় | ১২ এপ্রিল ২০২৫
  • পশ্চিম আফ্রিকা থেকে সাগর পেরিয়ে পশ্চিমবঙ্গে ছড়িয়ে পড়া ‘স্মল হাইভ বিটল’ বা ‘চাকপোকা’ দমনের প্রধান দাওয়াই হতে পারে গ্রীষ্মের বাংলার কড়া রোদ। এমনটাই জানাচ্ছেন বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃষি কীটতত্ত্ব বিভাগের গবেষক ও অধ্যাপক শান্তনু ঝা।

    মৌমাছির শত্রু হিসেবে পরিচিত এই ধরনের গুবরে পোকার সন্ধান ইতিমধ্যেই পাওয়া গিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার আমডাঙায়। জ়ুলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার (জ়েডএসআই) গবেষক ঝিকমিক দাশগুপ্তর গবেষণায় ভারতের মাটিতে প্রথম এই ‘চাকপোকা’–র উপস্থিতি জানা গিয়েছে।

    তার পর থেকেই নড়েচড়ে বসেছেন কৃষিবিজ্ঞানীরা। কী করে এই পোকা দমন করে মৌমাছি, মৌচাক এবং মধু তাদের হাত থেকে রক্ষা করা যায়, তা নিয়ে ভাবনা–চিন্তা শুরু করেছিলেন বিজ্ঞানীরা। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই এমন নিদান বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের।

    চাকপোকা দমন সম্পর্কে অধ্যাপক শান্তনু ঝা ‘এই সময়’–কে বলেন, ‘মৌমাছিপালকরা মধু সংগ্রহের বাক্সগুলিকে সাধারণত রৌদ্রোজ্জ্বল এলাকায় রাখেন না। সেই কারণেই ওই বাক্সে সহজে বাসা বাঁধে আফ্রিকান স্মল হাইভ বিটল। এরা কড়া রোদ পছন্দ করে না। ওদের দমন করতে তাই এই সুযোগই নিতে হবে।’

    একই সঙ্গে গবেষক জানাচ্ছেন, যে জায়গায় মৌ–বাক্স রাখা হবে, সেখানকার মাটিতে এন্টোমোপ্যাথোজেনিক নিমাটেড নামে বিশেষ এক ধরনের জৈব রাসায়নিক ব্যবহার করতে হবে। এরা আসলে এক ধরনের কৃমি। এরা বিটলের লার্ভা ও পিউপা খেয়ে ফেলে। পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াহীন এই জৈব রাসায়নিকও স্মল হাইভ বিটল নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত কার্যকর।

    তবে যা–ই করা হোক না কেন, অতি দ্রুত সেই কাজ শুরু করে দেওয়ার পরামর্শই দিয়েছেন বিজ্ঞানী। ইতিমধ্যেই মালদা, উত্তর দিনাজপুর, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া এবং উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় মৌমাছি পালকদের মধু ভান্ডারে থাবা বসাতে শুরু করেছে এই চাকপোকা। শুধু বাংলা নয়, 'স্মল হাইভ বিটল' ছড়িয়েছে বিহার ও ঝাড়খণ্ডেও। খাদি অ্যান্ড ভিলেজ ইন্ডাস্ট্রি কমিশনের মৌমাছি পালকদের সংগঠনের অন্যতম কর্মকর্তা সুহৃদ কুমার দাস জানাচ্ছেন, অসমেও এই আফ্রিকান বিটল হানা দিয়েছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে।

    সংগঠন জানাচ্ছে, শুধু সুন্দরবন থেকেই বছরে ২০ হাজার কেজি মধু সংগ্রহ করা হয়। এই মধুর খ্যাতি জগৎজোড়া।

    এ ছাড়াও মালদায় লিচু–মধুর কদর রয়েছে আন্তর্জাতিক বাজারে। বাংলার মধু রপ্তানি করা হয় জার্মানি, বেলজিয়াম, ব্রিটেন, ও ইউএসএ–তে। তাই সেই মধুকে বাঁচাতে মরিয়া বিজ্ঞানীরা।

  • Link to this news (এই সময়)