• কর্মীর অভাবে তৈরি হয়নি মণ্ডল কমিটি, বিজয়া সম্মেলনী ঘিরে আজব ফতোয়া ফেসবুকে ‘সূচনা’ দিয়ে বিতর্কে বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ নেতা
    বর্তমান | ০৯ অক্টোবর ২০২২
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: পার্টির অভ্যন্তরীণ সাংগঠনিক নির্দেশ সোশ্যাল মিডিয়ার প্রকাশ করে বিতর্কে জড়ালেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নির্দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে বঙ্গ পার্টির অন্দরে। ফেসবুকে দীপাবলির মধ্যে বিজেপির মণ্ডল সভাপতিদের ‘বিজয়া সম্মেলনী’ আয়োজনের নির্দেশ দিয়েছেন অমিতাভবাবু। উত্তরবঙ্গে বসে সামাজিক মাধ্যমে সংগঠনমন্ত্রীর এহেন ‘সূচনা’ ঘিরে তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি। গেরুয়া পার্টিতে সংগঠনের নিচুতলার মূল ভিত হল মণ্ডল কমিটি। এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির ১২৩৬টির বেশি মণ্ডল রয়েছে। পার্টির নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিটি পূর্ণাঙ্গ মণ্ডল কমিটির সদস্য সংখ্যা ৬১ হতে হবে। কিন্তু গত বিধানসভা ভোটের পর থেকেই গেরুয়া পার্টির মণ্ডল কমিটি কার্যত ধসে গিয়েছে। ভোট পরবর্তী হিংসা, নেতৃত্বকে পাশে না পাওয়া সহ একাধিক কারণে গত এক বছরেও অধিকাংশ মণ্ডলে সভাপতি 

    কিংবা কমিটি গঠন করা যায়নি। বাস্তবে হাতে গোনা কিছু জেলায় ১০ থেকে ১৫ জনকে কোনও মতে ‘খাড়া’ করে জোড়াতাপ্পি দেওয়া কমিটি হয়েছে। কিন্তু তার বাস্তবতা যাচাই করতে গেলে পাঁচ থেকে সাতজন জুটবে, সাফ কথা রাজ্য নেতাদের একাংশ।

    সংগঠনের এহেন দৈন্যদশায় মণ্ডল সভাপতিদের অমিতাভবাবু আজব নিদান দিয়েছেন। তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, মণ্ডলের ২০৮ জন কার্যকর্তা এবং অন্যান্যদের একসাথে তালিকা তৈরি করে নিজ নিজ মণ্ডলে ‘বিজয়া সম্মেলনীর’ পরিকল্পনা সুনিশ্চিত করুন। এহেন নির্দেশ নিয়ে কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছেন বিজেপির একাধিক জেলা সভাপতি। তাঁদের ব্যাখ্যা, অধিকাংশ জেলায় মণ্ডল কমিটি নেই। শত অনুরোধ-উপরোধ করেও মণ্ডল সভাপতির জন্য যোগ্য লোক পাওয়া যাচ্ছে না। সেই আবহে ২০৮ জন জোগাড় করে মণ্ডলে বিজয়া সম্মেলনীর আয়োজন কার্যত আকাশ-কুসুম কল্পনা। কিন্তু সংগঠনের শীর্ষ নেতা দলের এহেন চরম বাস্তবতাকে জেনেও কেন ফেসবুকে এই নির্দেশ দিলেন? জবাবে বিজেপির এক শীর্ষ রাজ্য নেতা বলেন, গোটাটাই দিল্লি নেতৃত্বের কাছে নিজেকে ‘কেজো’ প্রমাণ করা। কেন? তাঁর কথায়, অমিতাভবাবু সংগঠনকে কার্যত ভার্চুয়ালি চালাতে চান। রাজ্য কমিটির গুরুত্বপূর্ণ নেতারা মণ্ডল কিংবা জেলাস্তরে গিয়ে বৈঠক কিংবা প্রবাসে অনিচ্ছুক। সেই কারণে দলের সাংগঠনিক এই ‘সূচনা’ ফেসবুকে দিতে হচ্ছে। সেই মতো পেটোয়া কিছু জেলা সভাপতি হাতে গোনা কিছু মণ্ডলকে দিয়ে বিজয়া সম্মেলনীর আয়োজন করবে। আর সেই ছবি দিল্লির কিছু নেতাকে ‘ট্যাগ’ করে ফের ফেসবুকে পোস্ট করে নিজেরাই বাহবা নেবেন।
  • Link to this news (বর্তমান)