• বাতিল প্রশাসনিক ‘সারপ্লাস ট্রান্সফার’, পুরনো কর্মস্থলে ফিরবেন বদলি হওয়া শিক্ষকরা
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ১২ এপ্রিল ২০২৫
  • সুপ্রিম কোর্টে নির্দেশে চাকরি হারিয়েছেন বাংলার ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা। এর ফলে রাজ্যের হাজার হাজার স্কুলে শিক্ষক সংকট দেখা দিয়েছে। কীভাবে নিত্যদিনের ক্লাস চলবে, তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন প্রধান শিক্ষকেরা। এবার চাকরি বাতিলের প্রভাব পড়ল বদলি প্রক্রিয়াতেও। ‘সারপ্লাস ট্রান্সফার’-এর আওতাধীন বদলি প্রক্রিয়া সংক্রান্ত নির্দেশিকা প্রত্যাহার করল রাজ্য সরকার। গোটা বিষয়টিকে নিজেদের জয় বলে দেখছেন বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘বহু দিন ধরে এই বদলির বিরুদ্ধে লড়াই চলছিল। সরকারের পদক্ষেপের ফলে প্রচুর শিক্ষক-শিক্ষিকা উপকৃত হবেন।’

    ২০২৩ সালে বিশেষ ‘সারপ্লাস ট্রান্সফার’-এর প্রক্রিয়া চালু করা হয়। মূলত ছাত্র-শিক্ষকের সংখ্যার অনুপাত ঠিক রাখার জন্যই এই প্রক্রিয়া চালু করা হয়। স্কুল শিক্ষা দপ্তর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এই বদলি প্রক্রিয়াই বাতিল করা হবে। শুধু তাই নয়, এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যাঁদের অন্যত্র বদলি করা হয়েছিল, তাঁদের পুরনো স্কুলে ফেরানো হবে। কলেজিয়াম অফ অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেক স্কুলেই শিক্ষক-শিক্ষিকার সংকট তৈরি হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্যই সম্ভবত সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এর ফলে স্কুলগুলির সমস্যা আরও বেড়ে যাবে।’

    শিক্ষামহলের একাংশের দাবি, প্রশাসনিক বদলির নামে দূরবর্তী স্থানে বদলি এবং চিকিৎসাজনিত কারণে বদলির আবেদনও খারিজ করা হয়েছে। উচ্চপ্রাথমিকে ৪৮৯ জন এবং মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক মিলিয়ে ৪৯০ জন জনের সারপ্লাস বদলির নির্দেশ জারি করা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ৬০৫ জনের বদলি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়েছে। বাকিদের প্রক্রিয়া এখনও চলছে। এই ৬০৫ জনের মধ্যে ‘মেডিক্যালি আনফিট’ বিভাগে বদলি করা হয় ১২০ জনকে। অভিযোগ, এই ১২০ জন বদলির বিষয়ে কিছুই জানতেন না। সেই কারণে বদলির নির্দেশ বাতিল করা হয়। বিকাশ ভবন সূত্রে খবর, আইনি জটিলতা এড়াতেই ‘সারপ্লাস ট্রান্সফার’-এর আওতাধীন বদলি প্রক্রিয়ার নির্দেশিকা প্রত্যাহার করা হল।

    শিক্ষকদের একাংশ জানিয়েছেন, রাজ্যের স্কুলগুলিতে হাজার হাজার শূন্যপদ রয়েছে। সেই পদগুলিতে নিয়োগ না করে কিছু শিক্ষক-শিক্ষিকাকে বাড়ি থেকে প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ কিমি এমনকি ৩০০ কিমি দূরত্ব পর্যন্ত ‘সারপ্লাস ট্রান্সফার’-এর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। নিয়ম রয়েছে, বদলির ক্ষেত্রে সর্বাধিক দুরত্ব ৫০ কিমি পর্যন্ত হতে পারে। সেই নিয়ম মানা হয়নি। মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক অনিমেষ হালদার বলেন, ‘উৎসশ্রী পোর্টালের মাধ্যমে বাড়ির কাছাকাছি স্কুলে বদলি নিয়ে আসা শিক্ষকদের উপরও এই নির্দেশ বলবৎ করা হয়েছিল।’
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)