• 'কয়েকটি দল ধর্মকে অপব্যবহার করে রাজনৈতিক সুবিধা নিতে চাইছে, প্ররোচনায় পা দেবেন না'
    ২৪ ঘন্টা | ১২ এপ্রিল ২০২৫
  • জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ওয়াকফ আইন নিয়ে তোলপাড় মুর্শিদাবাদের একাধিক জায়গা। জঙ্গিপুর, ধুলিয়ান, সুতি, সামসেরগঞ্জে প্রবল বিক্ষোভ দেখিয়েছেন সাধারণ মানুষজন। কোথাও পুলিস লাঠি চালিয়েছে কোথাও ফেটেছে কাঁদানে গ্যাসের সেল। কোথাও গুলি চলেছে। সামসেরগঞ্জের বিক্ষোভের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় সাধারণ মানুষের জন্য একটি পোস্ট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। সেখানে তিনি লিখেছেন, সব ধর্মের সকল মানুষের কাছে আমার একান্ত আবেদন, আপনারা দয়া করে শান্ত থাকুন, সংযত থাকুন। ধর্মের নামে কোনো অ-ধার্মিক আচরণ করবেন না। প্রত্যেক মানুষের প্রাণই মূল্যবান,  রাজনীতির স্বার্থে দাঙ্গা লাগাবেন না। দাঙ্গা যারা করছেন তারা সমাজের ক্ষতি করছেন।

    মুখ্যমন্ত্রী আরও লিখেছেন, মনে রাখবেন যে আইনের বিরুদ্ধে অনেকে উত্তেজিত, সেই আইনটি কিন্তু আমরা করিনি। আইনটি কেন্দ্রীয় সরকার করেছে। তাই উত্তর যা চাওয়ার কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে চাইতে হবে। আমরা এ বিষয়ে আমাদের বক্তব্য সুস্পষ্টভাবে বলেছি - আমরা এই আইনকে সমর্থন করি না। এই আইন আমাদের রাজ্যে লাগুও হবে না। তাহলে দাঙ্গা কিসের? আরো মনে রাখবেন, দাঙ্গায় যারা উস্কানি দিচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা আমরা নেব। কোনো হিংসাত্মক কার্যকলাপকে আমরা প্রশ্রয় দিই না। কিছু রাজনৈতিক দল ধর্মকে অপব্যবহার করে রাজনৈতিক সুবিধা নিতে চাইছেন। তাদের প্ররোচনায় পা দেবেন না। আমি মনে করি, ধর্ম মানে মানবিকতা, সহৃদয়তা, সভ্যতা ও সম্প্রীতি। সকলে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখুন।

    জঙ্গিপুর-সহ মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন এলাকায় গোলমালকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছে রাজ্যে প্রশাসন। আজ জরুরি ভিত্তিতে একটি আদালত বসছে। আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন বিরোধী দলনেতা। অশান্তি প্রবণ জায়গায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন সহ একগুচ্ছ দাবি জানিয়ে দায়ের মামলা। মামলা শুনবেন বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ। শনিবারই বিকেল ৪.৩০ নাগাদ স্পেশাল বেঞ্চ বসছে। বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি রাজা বসু চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চ।

    এদিকে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যের ডিজি রাজীব কুমার বলেছেন, সরকার স্পষ্ট করে বলছে কোনও রকম গুন্ডামি বরদাস্ত করা হবে না। একটা প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। তারপর সেটা সরকারি সম্পত্তি সম্পত্তি ধ্বংসের দিকে গিয়েছেন তার পর এটি গন্ডগোলকে সাম্প্রদায়িক রঙ দেওয়ার চেষ্টা চলছে। পুলিস প্রথমত হালকা বলপ্রয়োগ করে বেপরোয়া জনতাকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। কিন্তু গোলমাল যদি চরম আকার নেওয়ার চেষ্টা করে তাহলে আমরা অত্যন্ত শক্ত হাতে তা দমন করব। মানুষের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষা করার দায়িত্ব পুলিসের। যাদের সম্পত্তি ধ্ংস হয়েছে তাদের পাশে থাকবে সরকার। গুজব ছড়ানো বন্ধ করে হবে। বুঝতে হবে কিছু খারাপ লোক গোলমাল পাকাচ্ছে। হনুমান ডয়ন্তী উপলক্ষ্যে আজ অনেক মিছিল বের হবে। ফলে সতর্ক থাকতে হবে। সাধারণ মানুষকে বলব কোনও গুজবে বিশ্বাস করবেন না। মানুষকে বলবে রাস্তায় নেমে আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। কোনও গুন্ডামি বরদাস্ত করা হবে না। সবাইকে বলব সাধারণ মানুষের আবেগ নিয়ে খেলা করবেন না।

    এডিজি আইন শৃঙ্খলা জাভেদ শামিম বলেন,  প্রচুর গুজব ছড়াচ্ছে। পুলিস যতটা পেরেছে সংযত থেকেছে। পুলিসের উপরেও হামলা হয়েছে। তার পরেও সুজার মোড়ে ৪ রাউন্ড গুলি চলেছে। ২ জন আহত। আপাতত তারা বিপদমুক্ত। আপাতত ধুলিয়ান  পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। এখন আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। সবাই যৌথ ভাবে এর মোকাবিলায় নামতে হবে। এখনওপর্যন্ত ১১৮ জনকে আটক করা হয়েছে। আমরা সাংবাদমাধ্য়মেও সহযোগিতা চাইছি। 

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)