‘বাংলায় কার্যকর হবে না ওয়াকফ আইন, প্ররোচনায় পা নয়’, কড়া বার্তা দিয়েও সংযত থাকার আর্জি মুখ্যমন্ত্রীর
প্রতিদিন | ১২ এপ্রিল ২০২৫
নব্যেন্দু হাজরা: নয়া ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদে নেমেছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষজন। জেলায় জেলায় অশান্তির ছবি। কোথাও রাস্তা অবরোধ, কোথাও রেললাইনে নেমে ট্রেন আটকানো, কোথাও আবার এধরনের বিক্ষোভ দমনে পুলিশ, বিএসএফের গুলিচালনার মতো ঘটনা ঘটে চলেছে। তাতে যত না প্রতিবাদের সুর চড়ছে, তার চেয়ে ঢের বেশি সমস্যায় পড়ছেন সাধারণ মানুষ। এনিয়ে জনতাকে সতর্ক করেছে পুলিশ প্রশাসন। এবার মুখ্যমন্ত্রীও সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে সকলকে সংযত থাকার বার্তা দিলেন। সাফ জানিয়ে দিলেন, ‘মনে রাখবেন, যে আইনের বিরুদ্ধে অনেকে উত্তেজিত, সেই আইনটি কিন্তু আমরা করিনি। আইনটি কেন্দ্রীয় সরকার করেছে। আমরা এ বিষয়ে আমাদের বক্তব্য সুস্পষ্টভাবে বলেছি ? আমরা এই আইনকে সমর্থন করিনা। এই আইন আমাদের রাজ্যে লাগুও হবে না।’
ওয়াকফ সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে ইদানিং সবচেয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে সীমান্তবর্তী মুর্শিদাবাদ এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা। জায়গায় জায়গায় পথে নেমে বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নাগরিকরা। তাতে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকেও। বিশেষত মুর্শিদাবাদের সুতি, ধুলিয়ান, আজিমগঞ্জে যেভাবে পরিবহণ ব্যবস্থার উপর আক্রমণ হচ্ছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এসবের জেরে এবার মুখ্যমন্ত্রী নিজেই সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে সকলকে সংযত থাকার বার্তা দিলেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘সব ধর্মের সকল মানুষের কাছে আমার একান্ত আবেদন, আপনারা দয়া করে শান্ত থাকুন, সংযত থাকুন। ধর্মের নামে কোনো অ-ধার্মিক আচরণ করবেন না। প্রত্যেক মানুষের প্রাণই মূল্যবান, রাজনীতির স্বার্থে দাঙ্গা লাগাবেন না। দাঙ্গা যারা করছেন তারা সমাজের ক্ষতি করছেন।’ নয়া ওয়াকফ আইন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মনে করিয়ে দেন, ‘মনে রাখবেন, যে আইনের বিরুদ্ধে অনেকে উত্তেজিত, সেই আইনটি কিন্তু আমরা করিনি। আইনটি কেন্দ্রীয় সরকার করেছে। তাই উত্তর যা চাওয়ার কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে চাইতে হবে। আর আমরা এ বিষয়ে আমাদের বক্তব্য সুস্পষ্টভাবে বলেছি ? আমরা এই আইনকে সমর্থন করি না। এই আইন আমাদের রাজ্যে লাগুও হবে না। তাহলে দাঙ্গা কিসের?’
পোস্টে মমতার আরও বক্তব্য, ‘মনে রাখবেন, দাঙ্গায় যারা উস্কানি দিচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা আমরা নেব। কোনও হিংসাত্মক কার্যকলাপকে আমরা প্রশ্রয় দিই না। কিছু রাজনৈতিক দল ধর্মকে অপব্যবহার করে রাজনৈতিক সুবিধা নিতে চাইছেন। তাদের প্ররোচনায় পা দেবেন না। আমি মনে করি, ধর্ম মানে মানবিকতা, সহৃদয়তা, সভ্যতা ও সম্প্রীতি। সকলে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখুন ? এই আমার আবেদন।’