'চাকরি আমাদেরও যায়!' যন্ত্রণার কথা বললেন বেসরকারিরা, ফুঁসে উঠলেন কাজহারা শিক্ষক
হিন্দুস্তান টাইমস | ১২ এপ্রিল ২০২৫
বাংলায় চাকরিহারা হয়েছেন প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক। নানাভাবে আন্দোলনে নেমেছেন তাঁরা। অনশনও করছেন কয়েকজন চাকরিহারা শিক্ষক। সেই আন্দোলনের পাশে রয়েছেন অনেকেই। দীর্ঘ মিছিল হয়েছে কলকাতায়। তবে এসবের মধ্য়েই একটা অন্য ধরনের চর্চাও চলছে চায়ের ঠেক থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
অনেকেই বলছেন এই বাংলাতেই রোজ অসংগঠিত ক্ষেত্রে বহু কর্মীর চাকরি যায়। কাল চাকরি থাকবে কি না তা নিয়ে কোনও নিশ্চয়তা নেই একাধিক বেসরকারি সংস্থার কর্মীদের। কিন্তু সেই হতভাগ্য কর্মীদের পাশে থাকার মতো কেউ নেই।
বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় এনিয়ে নানা ধরনের মন্তব্য উঠে আসছে। সম্প্রতি একটি ভিডিয়োতে বেসরকারি সংস্থার এক কর্মী উল্লেখ করেছিলেন রোজ নানা যন্ত্রণা বুকে চেপে, চাকরি হারানোর আশঙ্কাকে মাথায় রেখেই আমাদের কাজ করে যেতে হয় হাসি মুখে। মূলত মার্কেটিংয়ের চাকরি যারা করেন তাঁদের কী চাপের মধ্য়ে থাকতে হয়, কথায় কথায় চাকরি হারানোর আশঙ্কা কীভাবে তাঁদের গ্রাস করে সেটাই কার্যত বলার চেষ্টা করছেন অনেকে।
সোশ্য়াল মিডিয়ায় লেখা হয়েছে কোভিডের সময় বহুজনের চাকরি গিয়েছে। সংসার একেবারে বিপর্যস্ত হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সেই সময় পরিবারগুলি পাশে বিশেষ কাউকে পাওয়া যায়নি। অনেকে লড়াই করে ফের ঘুরে দাঁড়িয়েছেন।অনেকে আবার হারিয়ে গিয়েছেন। ভয়াবহ বিপর্যস্ত অবস্থা থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেননি। কিন্তু কোভিডের সময় বাড়িতে বসে বসে পুরো বেতন পেয়েছিলেন শিক্ষক শিক্ষিকারা।
বেসরকারি সংস্থার বহু কর্মী তাঁদের জীবন যন্ত্রণার কথা তুলে ধরেছেন সোশ্য়াল মিডিয়ায়। মূলত চাকরির অনিশ্চয়তার নানা দিক তাঁরা তুলে ধরেছেন। দীর্ঘ পোস্ট হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এনিয়ে নানা মন্তব্য ভেসে আসছে।
তবে পালটা কথাও রয়েছে। একজন শিক্ষিকা সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টের জবাবে লিখেছেন,' ঘৃন্য কিছু রাজনৈতিক মানুষের মতো আপনি ও আপনারা আছেন এই রাজ্য়ে যাদের অপরের অ্য়াক্সিডেন্ট হতে দেখলে বেরোজগার হতে দেখলে মজা লাগে? মনে মনে হয় পাবলিকলি সমাজমাধ্য়মে বুক পিটিয়ে বলেন, দ্যাখ কেমন লাগে!…আমার রাজ্যবাসীকে আর এক দৃষ্টিকোণ থেকে চিনতে শিখলাম।
তিনি প্রশ্ন করেছেন, এতগুলো আচমকা পথে বসা পরিবারের কেউ আপনার আপনজন নন? কারো বুক ফাটা কান্না স্পর্শ করল না? এই পরিস্থিতিতে ব্যঙ্গ করতে ইচ্ছে হল?…'
কার্যত দুটি ছবি উঠে আসছে। একপক্ষ বলছেন সরকার পোষিত স্কুলে শিক্ষক শিক্ষিকাদের একাংশ ফাঁকিবাজি করেন। এর ফল ভুগতে হয় ছাত্রছাত্রীদের। তবে সকলেই যে এমন করেন সেটা নয়। যোগ্য ও পরিশ্রমী শিক্ষকদের চাকরি যাওয়াতে কষ্ট পাচ্ছেন অনেকেই।
অন্য়দিকে বেসরকারি চাকরি করেন এমন অনেকে বলছেন চাকরি যাওয়ার যন্ত্রণা তাঁরা জীবনভর বয়ে বেড়ান। কঠোর পরিশ্রম করেও চরম অনিশ্চয়তার মধ্য়ে কাটান তাঁরা। দুর্নীতির জেরে যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও সরকারি চাকরি পান না অনেকেই। এটাও বোঝা দরকার। তাঁদের প্রতিও সহানুভূতি থাকা দরকার।
চাকরিহারা শিক্ষক চিন্ময় মণ্ডল HT বাংলাতে বলেন, আসলে আমরা শিক্ষকতার চাকরি পাওয়ার পরে আমরা মানসিকভাবে এমন একটা অবস্থানে থাকি যে আর চাকরি খুঁজতে হবে না আমাদের। কিন্তু বেসরকারি সংস্থার ক্ষেত্রে এমনটা হয় না অনেক ক্ষেত্রে। তাছাড়া এখানে তো আমাদের কলঙ্কিত করে ছাড়ানো হল। এটা ঠিক হয়নি।