শিক্ষক নেই, সেমেস্টার নিয়ে চিন্তায় করোনেশনের দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা
বর্তমান | ১৩ এপ্রিল ২০২৫
সংবাদদাতা, রায়গঞ্জ: সুপ্রিম কোর্টের রায়ে প্রায় ছাব্বিশ হাজার শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীর চাকরি বাতিলের জেরে এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের মধ্যে। বহু স্কুলের সিঙ্গল টিচাররা (যে স্কুলে একটি বিষয়ের জন্য একজনই শিক্ষক ছিলেন) চাকরি হারানোয় দ্বাদশের বেশ কিছু ক্লাস বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এই শিক্ষাবর্ষ থেকে সেমেস্টার পদ্ধতিতে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বরে রয়েছে দ্বাদশ শ্রেণির তৃতীয় সেমেস্টার। কিন্তু শিক্ষক না থাকায় ক্লাস কীভাবে হবে, সিলেবাস কীভাবে শেষ হবে তা নিয়ে বড় প্রশ্ন ইতিমধ্যে দেখা দিয়েছে স্কুলগুলির অন্দরে।
রায়গঞ্জ শহরে একাধিক স্কুল দুশ্চিন্তায় পড়েছে। রাজ্যের মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় মেধা তালিকায় জায়গা করে নেওয়া রায়গঞ্জ করোনেশন হাইস্কুলে বায়োলজি ক্লাস বন্ধ শিক্ষকের অভাবে। রায়গঞ্জের কৈলাসচন্দ্র রাধারানী বিদ্যাপীঠেও অর্থনীতি এবং মিউজিক ক্লাসে একজন করে শিক্ষিকা ছিলেন। তাঁরাও চাকরিহারা হওয়ায় অর্থনীতি ও মিউজিক ক্লাস বন্ধ। অন্য ক্লাসগুলি জোড়াতালি দিয়ে চালিয়ে নেওয়া গেলেও দ্বাদশের এই ক্লাসগুলি কে নেবেন তা নিয়ে চিন্তায় স্কুল কর্তৃপক্ষ।
রায়গঞ্জের দেবীনগর কৈলাসচন্দ্র রাধারানী বিদ্যাপীঠের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা রাখি বিশ্বাস বলেন, আমার স্কুলে অর্থনীতি ও মিউজিক বিষয়ে ক্লাস নেওয়ার কেউ নেই। মিউজিকে প্র্যাক্টিক্যাল রয়েছে, বাচ্চারা কী শিখবে? অর্থনীতি ক্লাস বন্ধ রাখতে হবে। কারণ অন্য কোনও শিক্ষক দিয়ে সেই ক্লাস করানো সম্ভব নয়।
রায়গঞ্জ করোনেশন হাইস্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক মৃত্যুঞ্জয় মিত্র বলেন, বায়োলজির একমাত্র শিক্ষিকা চাকরিহারা। স্কুলে আসছেন না। বায়োলজির দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস বন্ধ। বাচ্চারা একাদশ থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে উঠেছে। পার্টটাইম ক্লাস করানোর মতো শিক্ষক নেওয়া এই মুহূর্তে সম্ভব নয়। স্কুলের আর্থিক সামর্থ্য নেই।
শিক্ষক না থাকায় কার্যত দিশেহারা অবস্থা পড়ুয়াদের। করোনশন হাইস্কুলের দ্বাদশের ছাত্র পুষ্কর রায় বলে, সেমেস্টার পদ্ধতিতে পরীক্ষা হবে এবছর। বায়োলজি ক্লাস হচ্ছে না। থিওরি, প্র্যাক্টিক্যাল রয়েছে। সিলেবাস কীভাবে শেষ হবে, জানি না।