• লজ থেকে টাকা নয়ছয়ে অভিযুক্ত রেলকর্মীর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার
    বর্তমান | ১৩ এপ্রিল ২০২৫
  • সংবাদদাতা, পতিরাম: রিজার্ভেশনের টাকা নয়ছয়ে চলতি সপ্তাহেই সাসপেন্ড হয়েছিলেন বালুরঘাটের রিজার্ভেশন কাউন্টারের সুপারভাইজার। শনিবারই তদন্ত কমিটির আসার কথা ছিল বালুরঘাটে। এর মধ্যেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে ‘আত্মঘাতী’ সাসপেন্ডেড সুপারভাইজার। পুলিস সূত্রে খবর, মৃত রেলকর্মীর নাম তুহিনশুভ্র ভট্টাচার্য (৪৫)। বাড়ি উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে। তিনি বালুরঘাটের চকভৃগুতে ভাড়া থাকতেন। 

    রেল সূত্রে খবর, তুহিন বালুরঘাট শহরে মিউজিয়ামের পাশেই রেলের রিজার্ভেশন কাউন্টারের সুপারভাইজার ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে রিজার্ভেশনের টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, রেলের প্রায় ১২ লক্ষ টাকা তিনি জমা করেননি। সেজন্য রেলের তরফে তাঁকে গত ৮ এপ্রিল সাসপেন্ড করা হয়। একটি তদন্তকারী দল এদিনই বালুরঘাটে আসার কথা ছিল। তার আগেই শুক্রবার রাতে তুহিন বালুরঘাট শহরের একটি লজে গিয়ে ওঠেন। সেখানেই রাতে  গলায় ফাঁস লাগিয়ে তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। 

    শনিবার সকালে পুলিস লজের দরজা ভেঙে তুহিনের ঝুলন্ত দেহটি উদ্ধার করে। তবে রেলের তরফে এনিয়ে বেশিকিছু বলা হয়নি। তবে তুহিনকে সাসপেন্ড করার বিষয়টি স্বীকার করেছে রেল। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহারের সিনিয়র ডিসিএম ধীরাজ চন্দ্রা কালিতা বলেন, ওই ব্যক্তি সাসপেন্ডেড ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত চলছিল। এই মৃত্যু নিয়ে মৃতের পরিবারও মুখ খুলতে চায়নি। মৃতের আত্মীয় প্রলয় ভট্টাচার্য বলেন, এখন এবিষয়ে আমরা কিছু বলতে পারব না। পরে বিষয়টি জানানো হবে। 

    পুলিস সূত্রে খবর, বালুরঘাট রেল স্টেশনে রেলের কাউন্টার রয়েছে। বালুরঘাট শহরেও রেলের একটি কাউন্টার রয়েছে। সেখান থেকেই রিজার্ভেশন টিকিট দেওয়া হয়। সেখানকার দায়িত্বে ছিলেন তুহিন। কয়েক বছর ধরে তিনি ওই কাউন্টার সামলাতেন। 

    রেল সূত্রে খবর, ওই কাউন্টারে রিজার্ভেশন টিকিটের মূল্য একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর রেল দপ্তরে জমা করা হয়। অভিযোগ, নির্দিষ্ট সময়ে পেরিয়ে গেলেও  টিকিটের প্রায় ১২ লক্ষ টাকা জমা করেননি তুহিন। অভিযোগ ওঠার পরই  তুহিনকে সাসপেন্ড করে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে রেল। একটি তদন্ত কমিটি এদিন বালুরঘাটে আসার কথা ছিল। তুহিনকেও রেলের সংশ্লিষ্ট অফিস  ডেকেছিল। এতে চরম দুশ্চিন্তায় ছিলেন সাসপেন্ডেড তুহিন। 

    শুক্রবার ভাড়া বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান তিনি। ওঠেন শহরের ফ্রেন্ড ইউনিয়ন ময়দানের কাছে একটি লজে। সেখানেই আত্মহত্যার ঘটনা। লজের ম্যানেজার অশোক সিদ্ধান্ত বলেন, শুক্রবার রাতে তিনি রুমে এসেছিলেন। টাকা আগেই মিটিয়ে দেন। রাতেই তিনি বেরিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছিলেন। আমরা নির্দিষ্ট সময়ে ফোন করি। কিন্তু ফোন ধরেননি। সকালে বিষয়টি বুঝতে পেরে পুলিসে খবর দেওয়া হয়। পুলিস দেহ ময়নাতদন্তে পাঠায়। বালুরঘাট সদর ডিএসপি বিক্রম প্রসাদ বলেন, পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)