• পরিচালন সমিতির সভাপতি করেও সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার, সরানো হল ‘বিতর্কিত’ সুজয়কে
    বর্তমান | ১৩ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া: গত মাসেই লৌলাড়ার রামানন্দ সেন্টিনারি কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি পদে রাজ্যের তরফে মনোনীত করা হয়েছিল সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কিন্তু সেই নির্দেশিকা কার্যকর হওয়ার আগেই ফের পরিবর্তিত নির্দেশিকা এসে পৌঁছল কলেজের অধ্যক্ষের কাছে। যেখানে সুজয়কে সরিয়ে ফের মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডুর স্বামী গুরুপদ টুডুকেই কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি হিসাবে মনোনীত করা হয়েছে। এতদিন ধরে সুজয় পরিচালন সমিতির সরকার মনোনীত সদস্য হিসাবে ছিলেন। সেই পদ থেকেও তাঁকে সরানো হয়েছে। কেন এই পদক্ষেপ, এই নিয়ে চর্চা চলছে জেলায়। তবে এতে বেজায় খুশি কলেজের অধ্যাপক, অধ্যাপিকা, শিক্ষকর্মী থেকে পড়ুয়ারা। 

    এনিয়ে সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘লৌলাড়া কলেজে যে অশান্তি হচ্ছে, তাতে আমি আর থাকতে চাইছি না। তাই আমি নিজেই পরিচালন সমিতি থেকে সরে এসেছি। মন্ত্রীর কাছেও জানিয়েছিলাম বিষয়টি।’ গুরুপদ টুডুকে ফোন করা হলে তিনি বিষয়টিকে কলেজের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে এড়িয়ে গিয়েছেন। প্রসঙ্গত, চলতি বছরের শুরুতে কলেজের এক অস্থায়ী মহিলা কর্মীকে কেন্দ্র করে অশান্তির সূত্রপাত। অধ্যাপকদের অভিযোগ, পরিচালন সমিতির সদস্য ঘনিষ্ঠ ওই মহিলা কর্মী রীতিমতো ছড়ি ঘোরাতেন কলেজের অন্যান্য অধ্যাপকদের উপর। অভিযোগ, এনিয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মামলা করা হয়। মহিলা কর্মীর বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেন অধ্যক্ষ। মহিলা কর্মীকে কলেজ থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। 

    এনিয়ে কলেজে ঢুকে অধ্যাপকদের পাল্টা হুঁশিয়ারি দিতে দেখা যায় সুজয়কে। তাঁর বিরুদ্ধে ‘থ্রেট কালচার’ চালানো হয় বলে অভিযোগ ওঠে। পাল্টা, অধ্যাপকদের ‘শয়তান’ বলেও সম্বোধন করতে দেখা যায় সুজয়কে। এর প্রতিবাদে পড়ুয়া ও অধ্যাপকদের আন্দোলন আরও বড় আকার নেয়। সেই আন্দোলনের আগুনে ঘি ঢালে গত ১০ মার্চ উচ্চশিক্ষা দপ্তরের জারি হওয়া একটি নির্দেশিকা। সেই নির্দেশিকায় দেখা যায়, গুরুপদ টুডুর পরিবর্তে ‘বিতর্কিত’ সুজয়কেই কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি হিসাবে মনোনীত করা হয়েছে রাজ্য উচ্চ শিক্ষাদপ্তর থেকে। এরপর নিজের ‘শয়তান’ মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছিলেন সুজয়। কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হল না। 

    কলেজের অধ্যাপিকা তথা ওয়েবকুপার রাজ্য কমিটির সহ-সম্পাদক অর্পিতা ঘোষ বলেন, ‘আমাদের দিনের পর দিন কলেজে অপমানিত হতে হচ্ছিল। আমাদের সম্পর্কে যে মন্তব্য উনি করেছেন, তাতে আমরা সুজয়বাবুকে কলেজের কোনও পদেই মেনে নিতে চাইছিলাম না। তারপরেও তাঁকে সভাপতি মনোনীত করে যে নির্দেশিকা এসেছিল, তা প্রত্যাশিত ছিল না। বিষয়টি শিক্ষামন্ত্রীকেও জানাই আমরা।’ কলেজের অধ্যাপক সমীরকুমার সেন বলেন, ‘সম্প্রতি আমরা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছিলাম। আমাদের সমস্যার কথা উনি শুনেছিলেন। তারপরেই আগের নির্দেশিকার পরিবর্তে নয়া নির্দেশিকা এসে পৌঁছেছে।’  মতামত জানতে কলেজের অধ্যাপক প্রতাপকুমার পন্ডাকে ফোন করা হয়েছিল। ফোন তোলেননি তিনি।
  • Link to this news (বর্তমান)