নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: ভরাট হওয়া পুকুর থেকে মাটি তোলার কাজ শুরু করল বর্ধমান পুরসভা। ভরাটকারীদের বিরুদ্ধেও আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। শুক্রবার শহরের আলমগঞ্জে একটি পুকুর থেকে মাটি তোলা হয়। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই পুকুরের মালিককে আগে নোটিস করা হয়েছিল। তিনি তারপরেও মাটি তোলেননি। পুরসভা এরপরেই মেশিন লাগিয়ে ওই জলাশয় থেকে মাটি তুলে ফেলে। পুরসভার চেয়ারম্যান পরেশচন্দ্র সরকার বলেন, কয়েকদিন আগে আমাদের কাছে তেজগঞ্জে পুকুর ভরাটের অভিযোগ এসেছিল। সেখানে গিয়ে আমরা দেখি সত্যিই পুকুর ভরাট হচ্ছে। পুকুরের মালিককে নোটিস করে মাটি তোলার জন্য বলা হয়। তিনি তা না করায় আমরাই সেই কাজ করে দিয়েছি। ওই পুকুরের মালিকের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। শহরে আরও কয়েকটি পুকুর থেকেও মাটি তোলা হবে। কোনওভাবেই পুকুর ভরাট করতে দেওয়া যাবে না।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরে পুকুরের সংখ্যা আগের তুলনায় অনেক কমে গিয়েছে। এখন হাতেগোনা কয়েকটি বড় পুকুর রয়েছে। সেগুলিও বিভিন্ন কৌশলে ভরাটের চেষ্টা চলছে। কংগ্রেস নেতা গৌরব সমাদ্দার বলেন, পুকুর ভরাট নিয়ে আমরা বহুদিন ধরেই সোচ্চার হচ্ছি। পুরসভায় বহুবার ডেপুটেশন দেওয়া হয়েছে। তারপরও কোনও কাজ হচ্ছে না। শহরে একের পর এক পুকুর ভরাট হয়েই চলছে। শাসকদলের মদত না থাকলে এমনটা হতে পারে না। পুরসভা লোক দেখানোভাবে কিছু পুকুর থেকে মাটি তুলছে। কিন্তু পুকুর মালিকের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে না। সেটা হলে এই কাজ করার সাহস আর অন্য কেউ দেখাত না। পুরসভার চেয়ারম্যান বলেন, সম্প্রতি আমরা সাত থেকে আটটি পুকুর ভরাট বন্ধ করেছি। কেউ অভিযোগ করলেই তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পুরসভার সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, শহরের অন্যতম প্রাচীন পুকুর শ্যামসায়ের সংস্কারের কাজ চলছে। এছাড়া আরও কয়েকটি পুকুর সংস্কারের পরিকল্পনা রয়েছে পুর কর্তৃপক্ষর। শহরের বাসিন্দারা বলছেন, এই উদ্যোগ পুরসভার আরও আগে নেওয়া উচিত ছিল। সেটা হলে এতগুলি বড় পুকুর ভারাট হতো না। পুকুর বুজিয়ে বহুতল নির্মাণ হয়েছে। তারপরও একসময় পুরসভা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। শহরের একটি বড় জলাশয়ের দিকে প্রমোটারদের নজর রয়েছে। সেটি বেশ কয়েকবার ভারাটের চেষ্টাও করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতিবাদে তাদের উদ্দেশ্য পূরণ হয়নি। কিন্তু সেই বড় জলাশয়টি আদৌ রক্ষা করা যাবে কি না, তা নিয়ে অনেকেই সংশয়ে রয়েছেন। নিজস্ব চিত্র