• ১০ বছরের ছোট ছেলের সঙ্গে পালিয়ে গিয়ে স্বামীকে ছবি, পুলিসের দ্বারস্থ যুবক
    বর্তমান | ১৩ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: বয়সে ১০বছরের ছোট এক যুবককে নিয়ে ঘর ছেড়ে চলে গিয়েছেন বধূ। কমবয়সি প্রেমিকের সঙ্গে কত সুখে আছেন তা জানাতে পরিপাটি পোশাকে ছবি তুলে স্বামীকে পাঠালেন ওই বধূ। স্ত্রীর পাঠানো সেই ছবি দেখে রাগে গজগজ করে থানায় হাজির হলেন স্বামী। পুলিসের কাছে তাঁর আর্জি, কাটা ঘায়ে যে নুনের ছিটে দেওয়া হচ্ছে তা নেওয়া যাচ্ছে না। কিছু একটা করুন। 

    ওই দম্পতির আট বছরের এক ছেলে আছে। স্বামী-ছেলেকে ছেড়ে গত ২৮মার্চ ভূপতিনগর থানার নাড়ুয়াবিলা গ্রামের ওই বধূ লাউদিঘি গ্রামের এক যুবকের সঙ্গে চম্পট দিয়েছেন। গৃহবধূর বয়স ৩২বছর। লাউদিঘির ওই যুবকের বয়স ২২বছর। গত ৭এপ্রিল ওই বধূর স্বামী ভূপতিনগর থানায় সায়নকুমার দে নামে ওই যুবকের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছেন। গত ২৮মার্চ থেকে দু’জনের মোবাইল বন্ধ। শনিবার সকালে আচমকা ওই গৃহবধূ ফোন চালু করে তাঁর স্বামীকে একটি ছবি পাঠান। ছবির সঙ্গে লেখা, ‘বেশ ভালো আছি।’

    জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত যুবক লাউদিঘি গ্রামে রাজ্য সরকারের অধীনে একটি ‘উৎকর্ষ বাংলা’ সেন্টার খোলার জন্য জেলাশাসক অফিসে আবেদন করেছিল। আবেদনের ভিত্তিতে অতিরিক্ত জেলাশাসক(সাধারণ) অফিসে ইন্টারভিউ হয়। তারপর সেন্টারের অনুমোদন নিয়ে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি চলছিল। এরমধ্যেই বধূকে নিয়ে চম্পটের ঘটনায় তার ওই সেন্টারের অনুমোদন দেওয়া হবে না বলে জেলা প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পুলিস সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত যুবক সেন্টারে প্রশিক্ষণ দিয়ে মেশিনপত্র কিনে কাজ পাইয়ে দেওয়ার নামে অনেকের কাছ থেকে টাকা তুলেছে। এক পুলিস অফিসারের ভাগ্নার কাছ থেকে দু’লক্ষ টাকা নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।

    শনিবার সকালে নাড়ুয়াবিলা থেকে ওই বধূর স্বামী ভূপতিনগর থানায় হাজির হন। ১০বছরের ছোট প্রেমিকের সঙ্গে স্ত্রী রঙিন জগতে ভাসছে বলে তদন্তকারী অফিসারকে জানান। এই ঘটনা তাঁকে এবং তাঁর সন্তানকে প্রচণ্ড আঘাত দিয়েছে বলে ওই যুবকের দাবি। ৭এপ্রিল অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর একাধিকবার পুলিস অভিযুক্ত যুবকের বাড়িতে গিয়েছে। কিন্তু, তার খোঁজ মেলেনি। দু’জনের মোবাইল বন্ধ থাকায় লোকেশন জানার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে।

    ওই গৃহবধূর স্বামী বলেন, কাজের সূত্রে আমি মুম্বইয়ে থাকতাম। ওই যুবক উৎকর্ষ বাংলার অনুমোদন পাওয়ার আগে থেকেই জুতো তৈরির বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিত। সেখানে ৩০জনের ব্যাচ চলত। আমার স্ত্রীও সেখানে নিয়মিত যেত। সেই সুবাদে স্ত্রীর সঙ্গে ওই যুবকের একটা সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তারপর দু’বার স্ত্রী ওই যুবকের সঙ্গে পালিয়ে যায়। সালিশির মাধ্যমে দু’বার ফিরিয়ে আনা হয়। ২৮মার্চ তৃতীয়বার চলে যাওয়ার পর দু’জনের খোঁজ নেই। অগত্যা থানায় অভিযোগ জানিয়েছি। শনিবার স্ত্রী সাজগোজ করে ছবি তুলে আমাকে হোয়াটসঅ্যাপ করেছে। প্রেমিকের সঙ্গে কত সুখে আছে সেটা জানাতে এই ছবি পাঠিয়েছে। এটা কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে দেওয়া ছাড়া আর কী! 

    স্থানীয় বাসুদেববেড়িয়া পঞ্চায়েতের তৃণমূল নেতা দীপঙ্কর খাটুয়া বলেন, লাউদিঘির ওই যুবক এর আগেও ওই বধূকে নিয়ে চলে গিয়েছিল। তারপর ফের তারা চম্পট দিয়েছে। ভূপতিনগর থানার ওসি শেখ মহম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, নাড়ুয়াবিলা গ্রামের এক বধূকে ফুসলিয়ে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)