শীতল চক্রবর্তী, বালুরঘাট
দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর ব্লকের সুকদেবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কাঁটাবাড়িতে ২০১৬ সালে পানীয় জল প্রকল্পের উদ্বোধন হয়েছিল। এর জন্য পুনর্ভবা নদীর জল শোধন করে তপন, কুশমন্ডি ও গঙ্গারামপুর এলাকার লক্ষাধিক পরিবারকে আর্সেনিক ও ফ্লুরাইড মুক্ত জল সরবরাহ করতে ৩ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। এক বছরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু ন’বছর গড়িয়ে গেলেও প্রকল্পটি কার্যত অচল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। গরম পড়তেই সংশ্লিষ্ট এলাকায় তীব্র জল সঙ্কট দেখা দিয়েছে। অভিযোগ, প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার পর এলাকায় বিশাল বিল্ডিং তৈরি করেই কাজ বন্ধ করে দেয় ঠিকাদার সংস্থা। দীর্ঘদিন অযত্নে পড়ে থাকা সেই ভবনগুলির একাংশ এখন প্রায় ভেঙে পড়ার মুখে। পুনর্ভবা নদী থেকে জল তোলার কাজও প্রায় বন্ধ। স্থানীয়দের অভিযোগ, শ্রমিকদের মজুরি ঠিকমতো না মেলায় কাজ থমকে রয়েছে। ঠিকাদার সংস্থার এক প্রতিনিধি অমিত মণ্ডল বলেন, ‘শ্রমিকদের নিয়মিত মজুরি না দেওয়ার জন্য অনেকেই কাজ ছেড়ে দিচ্ছেন। ফলে কাজ আর এগোচ্ছে না।’
প্রকল্পটি চালুর সময় ব্যাপক প্রচার করেছিলেন রাজ্যের প্রয়াত পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই প্রকল্প নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছিল। ভাবা গিয়েছিল, এতদিনের জল–যন্ত্রণা আবার মিটবে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সেই আশা আজ হতাশায় বদলে গিয়েছে। এলাকাবাসী কানাই মণ্ডল, সন্টু মণ্ডল, কাদের আলি মিঁয়া বলেন, ‘যদি প্রকল্পটি সম্পূর্ণ হতো, আমরা আর্সেনিকমুক্ত জল পেতাম। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে শুধু আশ্বাস শুনেই দিন কাটছে। তীব্র গরম পড়তেই জল সঙ্কটে ভুগছি আমরা।’
গঙ্গারামপুরের বিজেপি বিধায়ক সত্যেন্দ্রনাথ রায় বলেন, ‘আমি তৃণমূলের বিধায়ক থাকার সময় কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কাজের যা অবস্থা, তাতে প্রকল্প শেষ হওয়ার সম্ভাবনা নেই।’ বিডিও অর্পিতা ঘোষাল বলেন, ‘প্রকল্প নিয়ে খোঁজখবর শুরু হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব কাজ শেষ করা হবে।’ এ সম্পর্কে জেলাশাসক বিজিনকৃষ্ণ বলেন, ‘প্রকল্পটি দ্রুত শেষ করার জন্য জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’