• প্রীতির বাড়ির ছাদ থেকেই বন্ধুকে ফোনে মারধরের কথা জানান অয়ন ‘আমি ফেঁসে গিয়েছি!’
    বর্তমান | ০৯ অক্টোবর ২০২২
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বুধবার ছিল দুর্গাপুজোর দশমী। সেদিন রাত ১০টা নাগাদ বান্ধবীর বাড়ি যান অয়ন মণ্ডল। প্রীতির বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে বন্ধু রাজুকে দাঁড় করিয়ে রেখেছিলেন তিনি। তাঁর উপর ছিল বিশেষ দায়িত্ব। প্রীতির বাবাকে দেখতে পেলেই ফোনে অয়নকে তা জানানোর কথা ছিল। তবে সকলের অগোচরেই বাড়িতে চলে আসেন প্রীতির বাবা দীপক জানা। তাতেই বিপত্তি। বন্ধুদের দাবি, বাবার বাড়ি ফেরার আগেই প্রীতির বাড়ির লোকজন অয়নকে একদফা মারধর করে। সেকথা ফোনে রাজুকে জানিয়েছিলেন অয়নই। বলেছিলেন, ‘ভাই, আমি এখানে ফেঁসে গিয়েছি।’ অয়নের আরেক বন্ধু দীপঙ্কর বলেন, বছর পাঁচেক ধরে প্রেমের সম্পর্কে রয়েছেন অয়ন ও প্রীতি। তবে ইদানিং বান্ধবীর মায়ের সঙ্গেও অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত হয়ে পড়েন তিনি। তারপর থেকেই বান্ধবীর সঙ্গে মাঝেমধ্যে ঝামেলা হতো ভিকির (অয়নের ডাক নাম)। বন্ধুর কথায়, বাবা বাড়িতে না থাকলে মাঝেমধ্যেই প্রীতি ও তার মা অয়নকে ডেকে পাঠাত। দশমীর রাতেও তেমনটাই ঘটেছিল বলে দাবি অয়নের ঘনিষ্ঠ বন্ধু রাজুর। তাঁর দাবি, অয়নই তাঁকে বলেছিলেন, দশমীর রাতে প্রীতির মা ফোন করে তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছে। প্রীতির বাবা তখন বাড়িতে ছিলেন না। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ আচমকা বাবা এসে পড়ায় ছাদে লুকিয়ে পড়েন অয়ন। তখন প্রীতির নাবালক ভাই তাঁকে মারধর করে। রাত ১১টা ৪৪ মিনিটে ছাদ থেকে রাজুকে ফোন করেন তিনি। মারধরের জেরে বুকে যন্ত্রণা হচ্ছে বলেও জানান। রাজু বলেন, ১২টা বেজে ৩১ মিনিটে অয়নকে ফোন করি। পাড়ার ছেলে নিয়ে প্রীতির বাড়ি যাব কি না, জিজ্ঞাসা করি। ও বলে, আসতে হবে না। তারপরে একাধিকবার ফোন করেন রাজু। তবে অয়ন আর ফোন ধরেননি। রাজু দীনেশপল্লি ফিরে আসেন। রাত ৩ টে ৩ মিনিট নাগাদ অয়নের ফোন সুইচড অফ পান রাজু। অয়নের মা বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে প্রীতি আমাদের বাড়ি এসেছিল। সে দাবি করে, তার গর্ভে অয়নের সন্তান রয়েছে। তবে সেই দাবি কার্যত উড়িয়ে দিয়েছে মৃতের পরিবার। অয়নের বাবার দাবি, প্রীতির গোটা পরিবার মিলেই হত্যা করেছে অয়নকে। পুলিস তদন্তে জানতে পেরেছে, খুনের ঘটনায় ধৃতদের প্রত্যেকের আলাদা আলাদা ভূমিকা ছিল। খুনের পরিকল্পনা করে প্রীতির মা রুমা। উসকানি দেয় প্রীতি। আর খুনে মূল অভিযুক্ত বান্ধবীর নাবালক ভাই। তার ইট ও ব্যাটের আঘাতেই মৃত্যু হয় যুবকের। পুলিসের দাবি, লাশ পাচারের পরিকল্পনা করে প্রীতির বাবা। তাঁর কথাতেই দুই বন্ধুকে দিয়ে ফোন করে মিনিডোর ভাড়া করা হয়। শেষে ২০০০ টাকার বিনিময়ে লাশ মগরাহাটের পরিত্যক্ত জমিতে ‘ডাম্প’ করে দিয়ে আসে মিনিডোরের চালক।  
  • Link to this news (বর্তমান)