এই সময়: ইডি এবং সিবিআইয়ের পর বিভিন্ন ট্যাক্স অথরিটিকে দিয়ে তাঁকে চাপে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি যেখানকার নির্বাচিত সাংসদ, সেই ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রে সেবাশ্রয় স্বাস্থ্য শিবির যাতে সফল না–হয়, তার জন্য এই ছক কষা হয়েছিল বলে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ইঙ্গিত দিয়েছেন। যদিও এই ধরনের ‘প্রেশার পলিটিক্স’–এর সামনে তিনি কোনও ভাবে পিছু হটবেন না বলে সাফ জানিয়েছেন অভিষেক। উত্তর ২৪ পরগনার সোদপুরে শনিবার একটি বেসরকারি হাসপাতালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অভিষেক কয়েক সপ্তাহ আগে শেষ হওয়া সেবাশ্রয় স্বাস্থ্য শিবিরের কথা উল্লেখ করেন। আর সেই প্রসঙ্গেই কেন্দ্রীয় এজেন্সির ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ।
এ দিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমরা সেবাশ্রয় করেছি, যারা প্রায় ১২ লক্ষ মানুষকে বিনা পয়সায় চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দিয়েছে, ওষুধ পৌঁছে দিয়েছে, বিভিন্ন টেস্টের রিপোর্ট পৌঁছে দিয়েছে, অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। আর বিভিন্ন ট্যাক্স অথরিটিকে দিয়ে চিঠি করানো হয়েছে, যাতে আমি পিছিয়ে যাই।’ অতীতেও একই ভাবে ট্যাক্স অথরিটিকে দিয়ে চিঠিচাপাটি চালানো হয়েছিল বলে জানিয়েছেন অভিষেক। তাঁর কথায়, ‘আমি ডায়মন্ড হারবারে ২০২৪ সালের প্রথম দিকে বার্ধক্য ভাতা নিয়ে ‘শ্রদ্ধার্ঘ্য’ প্রকল্প শুরু করি। আমি যাতে এটা না–করতে পারি, সেই কারণে বিভিন্ন ট্যাক্স অথরিটিকে দিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। আমাকে ভয় দেখানো হয়েছে।’
অতীতে বিভিন্ন মামলায় ইডি কিংবা সিবিআই অভিষেককে তলব করেছে। অভিষেকের পরিবারের সদস্যরা কেন্দ্রীয় এজেন্সির জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়েছেন। কেন্দ্রীয় এজেন্সি বার বার তাঁকে নিশানা করলেও তিনি কোনও অবস্থাতেই যে মাথা নত করবেন না, সে কথা অভিষেক বহুবার বলেছেন। ট্যাক্স অথরিটির নতুন সক্রিয়তা নিয়ে এ দিন অভিষেক বলেন, ‘আমি জোর গলায় বলছি, পাঁচ–ছয়–সাত বছর ধরে আমি লড়াই করছি ইডি–সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে। নিম্ন আদালত থেকে হাইকোর্টে, হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্টে লড়াই করছি।’ নাম না–করে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের উদ্দেশে অভিষেক বলেন, ‘তোমার সিবিআই আমার কাঁচকলা করেছে। আগামী দিনে কাঁচকলা করবে। আমি মানুষকে পরিষেবা দিতে এসেছি, মানুষকে পরিষেবা দেবো, কেউ কেশাগ্র স্পর্শ করে দেখাও, মানুষের ক্ষমতা কী, সেটা আগামী দিনে ল্যাজেগোবরে করে বুঝিয়ে দেবো।’
সোদপুরে এ দিন বেসরকারি হাসপাতালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক, পুরসভার চেয়ারম্যান, পঞ্চায়েত সমিতির প্রধান উপস্থিত ছিলেন। সব স্তরের জনপ্রতিনিধিদের আরও দায়িত্বশীল হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন অভিষেক। তাঁর কথায়, ‘জনপ্রতিনিধি যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের দায়িত্ববান হওয়া উচিত। দায়িত্বশীল হওয়া উচিত। আমি একজন জনপ্রিতিনিধি। আমি একজন দায়িত্ববান জনপ্রতিনিধি। ভোটে জিতেই আমার কাজ শেষ নয়।’ জনপ্রতিনিধিদের আরও দায়িত্বশীল হওয়ার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকার অর্থ বরাদ্দ বন্ধ রাখা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার নিজের কোষাগারের অর্থ দিয়ে বিভিন্ন প্রকল্প যে ভাবে চালিয়ে যাচ্ছে, তা নিয়ে প্রচারে আরও জোর দেওয়ার পরামর্শ অভিষেক দিয়েছেন।