এই সময়: ২০২৬–এর বিধানসভা ভোটে প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া ‘ফুল প্রুফ’ করতে চাইছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। ইতিমধ্যেই একটি ভোট–কুশলী সংস্থাকে দিয়ে তাঁরা রাজ্যের ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে সমীক্ষা করিয়েছেন। সূত্রের খবর, ওই ভোট–কুশলী সংস্থা তাদের রিপোর্ট সম্প্রতি দিল্লিতে জমাও দিয়েছে। সেখানে প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য সম্ভাব্য তিনজন করে প্রার্থীর নাম বাছাই করা হয়েছে।
তবে এটাই চূড়ান্ত নয়। বিজেপির অন্দরের খবর, আগামী বছর জানুয়ারিতে অন্য একটি ভোট–কুশলী সংস্থাকে দিয়ে ফের বাংলায় সমীক্ষা করাবেন অমিত শাহরা। সেই সংস্থাও বিধানসভাভিত্তিক তিনজন করে সম্ভাব্য বিজেপি প্রার্থীর নাম জমা দেবে। সেটাও শেষ কথা নয়। একই সময়ে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বও সম্ভাব্য প্রার্থীদের একটি তালিকা দিল্লিতে পাঠাবেন। তিনটি রিপোর্ট খতিয়ে দেখে তবেই ২৬–এর বিধানসভা ভোটে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করবে বিজেপি। সূত্রের খবর, নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণার অনেক আগে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করে বাংলায় ভোট–প্রচারের কাজ শুরু করে দিতে চাইছেন শাহরা।
২০২১–এর বিধানসভা নির্বাচনে ভারডুবির জন্য অনেকগুলি কারণকে চিহ্নিত করেছে বিজেপি। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো প্রার্থী নির্বাচন। দলের একাংশের মতে, ২১–এ প্রার্থী নির্বাচন শুধুমাত্র যোগ্যতার নিরিখে হলে ফালাফল অন্যরকম হতে পারত। এ রাজ্যের এক বর্ষীয়ান বিজেপি নেতার কথায়, ‘২১–এ বাংলার মানুষ পরিবর্তন চেয়েছিল। কিন্তু আমরা বহুক্ষেত্রে ভুল করেছি। এমনকী প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও।
সে বারও একটি বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। কিন্তু সেই সমীক্ষা রিপোর্টকে গুরুত্ব না দিয়ে বড় নেতাদের ঘনিষ্ঠদেরই টিকিট দেওয়া হয়েছে। তাতে বহু অযোগ্য বিজেপির টিকিটে বিধানসভা ভোটে লড়ার সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন।’
এ বার তাই প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা নিয়েছে বিজেপি। সূত্রের খবর, এলাকায় দাগী হিসেবে পরিচিত এমন কাউকে টিকিট দেওয়া হবে না বলে দলীয়স্তরে সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি, ভোটের আগে অন্য দল থেকে কেউ বিজেপিতে যোগ দিলে তাঁদের টিকিট দেওয়ার সম্ভাবনাও কম। বঙ্গ–বিজেপির এক পদাধিকারীর কথায়, ‘এলাকায় জনপ্রিয়তা নেই, এমন কাউকে টিকিট দেওয়া হবে না। এ বার আর বড় নেতা ধরে কাজ হবে না। যোগ্যতাই একমাত্র মাপকাঠি।’
২১–এর ভোটে প্রার্থী নির্বাচনের সময়ে দিল্লি থেকে বাংলার বিজেপি নেতাদের সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির জেতার সম্ভাবনা কতটা একমাত্র সেটাই প্রার্থী নির্বাচনের মাপকাঠি, অন্য কিছু না। এ বার সেই নীতিরও কিছুটা পরিবর্তন ঘটতে চলেছে পদ্মে। দলের এক কেন্দ্রীয় নেতার ব্যাখ্যা, ‘জেতার সম্ভাবনা আছে কি না, সেটা অবশ্যই বিবেচ্য। কিন্তু ব্যক্তির ভাবমূর্তি বিবেচনা করা হবে না, এমনটা এ বার আর হবে না।’