মুর্শিদাবাদে ওয়াকফ আইন ঘিরে হিংসার ঘটনায় এবার কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সরব হলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা মদন মিত্র। শনিবার তিনি বলেন, ‘এই হিংসা শুধু বাংলায় নয়, সারা দেশ জুড়েই ছড়িয়েছে। এর দায় একমাত্র কেন্দ্রের। জোর করে দেশজুড়ে ওয়াকফ আইন চাপিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র সরকার। আজ দেশের যেখানেই হিংসার ঘটনা ঘটছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে তার দায় নিতে হবে।’
মুর্শিদাবাদে ওয়াকফ আইন বিরোধী বিক্ষোভ গত কয়েকদিনে ভয়াবহ রূপ নেয়। পাথর ছোড়া, অগ্নিসংযোগ, ট্রেন অবরোধ, সরকারি দপ্তর ভাঙচুরের পাশাপাশি পুলিশ কর্মীদেরও টার্গেট করা হয়। ইতিমধ্যে মৃত্যু হয়েছে তিন জনের— যার মধ্যে এক বাবা ও ছেলে রয়েছেন। ১৫ জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। গ্রেফতার ১৫০ জনেরও বেশি।
সবচেয়ে বেশি উত্তেজনা ছড়িয়েছে সামসেরগঞ্জের জাফরাবাদ ও সুতির এলাকাগুলিতে। সেখানে বিক্ষোভের মাঝে বাড়িতে ঢুকে হরগোবিন্দ দাস ও তাঁর ছেলে চন্দনকে নৃশংসভাবে ধারাল অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা হয়। পরে হাসপাতালে তাঁদের মৃত ঘোষণা করা হয়।
রাজ্যের পরিস্থিতি সামাল দিতে ইতিমধ্যেই BSF মোতায়েন করা হয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশে কেন্দ্রীয় আধাসেনা পাঠানো হচ্ছে মুর্শিদাবাদে। কেন্দ্র জানিয়েছে, রাজ্য সরকারের অনুরোধে ১৬ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো হয়েছে।
এদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন, এই আইন বাংলায় কার্যকর হবে না। তাঁর সাফ কথা, ‘এই আইন কেন্দ্র করেছে, রাজ্য সরকারের কোনও যোগ নেই। আমরা বলেছি, এই আইন বাংলায় চালু হবে না, তাহলে এই হিংসা কেন?’
হাইকোর্ট এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্র ও রাজ্য, উভয়কেই ১৭ এপ্রিলের মধ্যে বিস্তারিত রিপোর্ট দিতে বলেছে। আদালতের মন্তব্য, ‘এই অবস্থায় আদালত চোখ বন্ধ করে থাকতে পারে না। নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য কড়া পদক্ষেপ জরুরি।’
রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসও জানান, তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করেছেন এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।