• মুর্শিদাবাদের হিংসায় ৩ জনের মৃত্যু, আদালতের নির্দেশে শান্তি ফেরাতে ১,৬০০ জওয়ান
    আজ তক | ১৩ এপ্রিল ২০২৫
  • পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ(Murshidabad)) জেলায় ওয়াকফ(Waqf)  আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। আইন বিরোধী বিক্ষোভ হিংসা(Violence)য় পরিণত হয়। একাধিক এলাকায় পাথরবৃষ্টি, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। অবরোধ করা হয় ট্রেন চলাচল। ক্ষতিগ্রস্ত হয় একাধিক অফিস। হামলা হয় পুলিশ কর্মীদের উপরও।

    এই হিংসা(Violence)য় এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন তিনজন। শনিবার দুপুরে একজন বাবা ও তাঁর ছেলে খুন হন। আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন পুলিশকর্মী। পরিস্থিতি সামাল দিতে নামানো হয়েছে বিএসএফ। পুলিশের তরফে গুজবে কান না দিতে আহ্বান জানানো হয়েছে।

    সামশেরগঞ্জের জাফরাবাদে হারগোবিন্দ দাস ও তাঁর ছেলে চন্দন দাসকে তাঁদের বাড়ির ভিতরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও চিকিৎসকরা তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন। পরিবারের দাবি, হামলাকারীরা প্রথমে বাড়িতে ঢুকে লুটপাট চালায়, তারপর দু'জনকে খুন করে। পুলিশের তরফে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। পরিবার ও স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

    অন্যদিকে, শুক্রবার সুতির সাজুর মোড়ে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হন ২১ বছরের ইজাজ আহমেদ। শনিবার সন্ধ্যায় মুর্শিদাবাদ(Murshidabad)) মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

    পিটিআই সূত্রে খবর, ধূলিয়ানে একটি বিড়ি কারখানার দুই শ্রমিক গোলাম মঈনুদ্দিন শেখ ও অপর এক জনও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। প্রশাসনের দাবি, তাঁদের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল এবং চিকিৎসা চলছে।

    পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ দফায় দফায় রুট মার্চ ও টহল চালাচ্ছে। এখনও পর্যন্ত ১৫০-র বেশি অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

    এই হিংসা(Violence)র ঘটনার জেরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব ভিডিও কনফারেন্স করেন রাজ্যের মুখ্যসচিব ও ডিজিপির সঙ্গে। ডিজিপির দাবি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে, তবে থমথমে। স্থানীয়ভাবে মোতায়েন বিএসএফের সহায়তা নেওয়া হচ্ছে।

    রাজ্যের অনুরোধে কেন্দ্র থেকে অতিরিক্ত ৫ কোম্পানি আধাসামরিক বাহিনী পাঠানো হচ্ছে। মোট ১৬ কোম্পানি, অর্থাৎ ১৬০০ জন জওয়ান মোতায়েন হবে মুর্শিদাবাদের  হিংসা(Violence)গ্রস্ত এলাকায়।

    রাজ্যপাল সি.ভি. আনন্দ বোস জানান, হাইকোর্টের নির্দেশে মুর্শিদাবাদ(Murshidabad)-সহ রাজ্যের বিভিন্ন হিংসা(Violence)গ্রস্ত এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও এই বিষয়ে আলোচনা করেছেন। হাইকোর্ট সঠিক সময়ে হস্তক্ষেপ করেছে বলে মত রাজ্যপালের।

    এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ‘ওয়াকফ(Waqf)  আইন বাংলায় কার্যকর হবে না।’ তিনি বলেন, ‘এই আইন কেন্দ্রের, আমাদের নয়। আমাদের সরকার এই আইনের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখে না।’ তিনি শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন।

    সুতির সাজুর মোড় ও শমশেরগঞ্জ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। বিক্ষোভকারীরা পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগিয়েছে, রেল সম্পত্তি ভাঙচুর করেছে, রাস্তা অবরোধ করেছে। নিউ ফরাক্কা-আজিমগঞ্জ রেলসেকশনে ছ’ঘণ্টা বন্ধ ছিল ট্রেন চলাচল।

    বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারীর দায়ের করা মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়েছে, আদালত চুপ করে থাকতে পারে না। নাগরিকদের সুরক্ষায় কড়া পদক্ষেপ জরুরি। কেন্দ্র ও রাজ্যকে ১৭ এপ্রিলের মধ্যে পুরো ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
  • Link to this news (আজ তক)