সমীর মণ্ডল, মেদিনীপুর
স্কুলের আট জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি গিয়েছে সুপ্রিম–রায়ে। এর মধ্যে ছ’জন শিক্ষক। দু’জন শিক্ষাকর্মী। ছয় শিক্ষকের মধ্যে পাঁচজনই বিজ্ঞান বিভাগের। বিজ্ঞান বিভাগের পাঁচ শিক্ষকের মধ্যে তিনজন ছিলেন অঙ্কের। বর্তমানে ওই স্কুলে একটিও অঙ্কের শিক্ষক রইলেন না। কী ভাবে চলবে স্কুল? দুশ্চিন্তায় স্কুল কর্তৃপক্ষ।
গড়বেতার নামকরা ব্যানার্জীডাঙা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রদ্যুৎ চক্রবর্তী শনিবার বলেন, ‘কী যে অবস্থা তা বলে বোঝাতে পারব না। একই সঙ্গে ছ’জন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও দু’জন শিক্ষাকর্মী নেই। দু’মাস আগে আরও এক শিক্ষক কলেজে চাকরি পেয়ে চলে গিয়েছেন। নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ মিলিয়ে তিনজন গণিতের শিক্ষক পেয়েছিলাম। তিনজনের চাকরি গেল সুপ্রিম কোর্টের রায়ে।
স্কুলে গণিতের কোনও শিক্ষকই নেই। ফিজিক্স, কেমিস্ট্রির শিক্ষকদের দিয়ে নিচু ক্লাসের অঙ্কের ক্লাস নেওয়াতে হচ্ছে। কিন্তু নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির অঙ্কের ক্লাস নেবেন কে?’ তিনি আরও বলেন, ‘স্কুলে প্রায় আড়াই হাজার ছাত্রছাত্রী। শিক্ষক সংখ্যা চল্লিশ ছিল, এখন আরও ছ’জন নেই। কী ভাবে স্কুল চালাবো কিছুই ভেবে পাচ্ছি না। স্কুল চালাতে শিক্ষিত প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের কাছে আবেদন করব স্বেচ্ছায় যদি ক্লাস করে দেন, তা হলে স্কুলও বাঁচবে, পড়ুয়ারাও বাঁচবে।’
এই স্কুল থেকে পড়াশোনা করা কয়েকশো পড়ুয়া শিক্ষকতার পেশায় রয়েছেন রাজ্য জুড়ে। সেই স্কুলে আজ করুণ অবস্থায় চিন্তিত প্রাক্তনীরাও। স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র বর্তমান প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘খবই চিন্তার বিষয়। স্কুলে অঙ্কের শিক্ষকই নেই। আমার ছেলে এ বার ওই স্কুলের দশম শ্রেণির পড়ুয়া। আগামী বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে। কী যে হবে জানি না। স্কুলের অঙ্কের শিক্ষক-শিক্ষিকা তাপস ঘোষ, আতেকা বানু, সুতপা পড়ুয়া প্রত্যেকেই খুব ভালো ছিলেন। ছাত্রছাত্রীরা স্কুলের শিক্ষকদের উপরে খুব ভরসা করে। এখন একটা বড় সঙ্কট দেখা দিল।’