সুজিত রায়, আলিপুরদুয়ার
একে তো পানীয় জলের সঙ্কট। তার উপরে জলের অভাবে দৈনিক স্নানটুকু বন্ধ। সপ্তাহে একদিন জল পড়ছে মাথায়। বাড়ছে চর্মরোগ। পাশাপাশি ছড়াচ্ছে রোগজীবাণুর সংক্রমণ। এটাই রোজনামচা আলিপুরদুয়ার জেলার কালচিনি ব্লকের চুয়াপাড়া চা বাগানে। পানীয় জল যন্ত্রণায় অতিষ্ট ডুয়ার্সের এই বাগানের বাসিন্দারা। নর্দমার ভিতর দিয়ে যে পাইপলাইন গিয়েছে, সেখান থেকেই পানীয় জল সংগ্রহ করছেন তাঁরা।
চুয়াপাড়া চা বাগানে গেলেই দেখা মিলবে, নালার সামনে সারিবদ্ধ ভাবে হাঁড়ি, কলসি, গামলা নিয়ে বসে আছেন মহিলারা। নর্দমার ভিতরের পাইপ থেকে তাঁরা খাবার জল ভরছেন। দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে পানীয় জলের এমনই সঙ্কটে ভুগতে হচ্ছে তাঁদের। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তর থেকে ঘরে ঘরে পানীয় জলের পাইপ লাইন করে দেওয়া হলেও তা থেকে পরিষেবা পাচ্ছে না বাগানের শ্রমিক মহল্লা। স্থানীয় বাসিন্দা ভবানি মহালির কথায়, ‘ঘরে পাইপলাইন থাকলেও জল পড়ে না।
এ কথা পঞ্চায়েত প্রধানকে বহুবার জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।’ তাঁর সুরে সুর মিলিয়ে সানিয়া হেমব্রম বলেন, ‘কখনও কখনও কয়েক কিলোমিটার দূরে গিয়েও পানীয় জলের সংস্থান করতে হয়।’ এ বিষয়ে তৃণমূল পরিচালিত চুয়াপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সুমন্তী চিকবড়াইক বলেন, ‘পানীয় জলের সমস্যার কথা আমার কানে এসেছে। জল প্রকল্পের জন্য আ্যকশন প্ল্যানও করা হয়েছে। দ্রুত এই সমস্যা মিটবে।’ জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের একজ়িকিউটিভ অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
জলের সমস্যা তীব্র আকার ধারন করায় অল আদিবাসী স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের কালচিনি ব্লক সভাপতি গুলশন মিনজ শুক্রবার জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। তিনি বলেন, ‘চা বাগানের ৫০টি পরিবারের জন্য এক ট্যাঙ্ক জল পাঠানো হয়। তাও আবার রাতে। ওই জলও ব্যবহারের অযোগ্য। জলের অভাবে এই গরমেও সপ্তাহে এক দিন করে স্নান করতে হচ্ছে। বাগানের দূষিত জলে শিশুদের চর্মরোগ ছড়াচ্ছে। অবিলম্বে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের তরফে ব্যাবস্থা না নেওয়া হলে দিন দিন সমস্যা আরও ভয়াবহ হবে।’ সমস্যা মেনে নিয়ে আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক আর বিমলা বলেন, ‘পিএইচই’র গাড়ি পাঠিয়ে সমাধানের চেষ্টা চলছে। কয়েকটি এলাকায় পাইপলাইনের সমস্যা রয়েছে। বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।’