সুমন ঘোষ, খড়্গপুর
বিভিন্ন জায়গায় নতুন করে গজিয়ে উঠছে ফেরিঘাট। অথচ, জেলা পরিষদের কাছেই নেই কোনও তথ্য। ফলে মেলেনি রাজস্বও। এবার অনুমোদনহীন ফেরিঘাটের সন্ধান পেতে পদক্ষেপ শুরু করল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদ। কোন নদীর ওপর কোথায় এমন ফেরিঘাট রয়েছে তা জানার পরেই আইনি পদ্ধতিতে সেগুলিকে জেলা পরিষদের আওতায় নিয়ে এসে নিলামে তোলা হবে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি প্রতিভারানি মাইতি বলেন, ‘কয়েকটি ফেরিঘাটের সন্ধান মিলেছে, যা থেকে জেলা পরিষদ কোনও রাজস্ব পায় না। জেলাজুড়ে এমন কতগুলি ফেরিঘাট রয়েছে তা খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। তারপর সেগুলি জেলা পরিষদের আওতায় এনে ডাকে তোলা হবে। যাতে জেলা পরিষদের আয় বৃদ্ধি হয়।’
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের আওতাধীন মোট ৯টি ফেরিঘাট রয়েছে। প্রতিবছর নিলামে ডাকও হয়। সেগুলি হল, মেদিনীপুর সদর ব্লকের নজরগঞ্জ, মনিদহ, উপরডাঙা, মালিয়াড়া-বড়কোলা, মুনিবগড়, দাসপুর-২ ব্লকের মাগুরিয়া, দাঁতন-১ ব্লকের বালিডাংরি, বেলমুলা-ওলডাঙা আর সবংয়ের কাঁটাখালি-আকনতলা। চলতি বছরে আবার নিলামের জন্য ডাক শুরু হয়েছে এই সব ফেরাঘাটের। জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর নজরগঞ্জ ফেরিঘাট যেখানে ৮ লক্ষ ৫০ হাজার টাকায় নিলামে উঠেছিল এবার তা বেড়ে হয়েছে ৯ লক্ষ ৪১ হাজার। মুনিবগড় ৩৫ হাজার টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৪০ হাজার টাকা। উপরডাঙা ১ লক্ষ সাড়ে ৬ হাজার থেকে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকায় উঠেছে। আর মালিয়াড়া ৩ লক্ষ ৫৫ হাজার থেকে ৩লক্ষ ৭৪ হাজার টাকায় উঠেছে। বাকি ফেরিঘাটগুলির নিলাম এখনও শেষ হয়নি।
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই নিলামের সময়ই জেলা পরিষদ জানতে পারে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় একাধিক নতুন ফেরিঘাট তৈরি হয়েছে। কোথাও নৌকায় পারপার চলে তো কোথাও বাঁশের অস্থায়ী সেতু বানিয়ে চলে পারাপার। কোথাও লাভের অর্থ ক্লাব নেয় তো কোথাও ব্যক্তিগত মালিকানায় তৈরি হয়েছে ফেরিঘাট। অভিযোগ, স্থানীয় শাসক দলের নেতাদের সঙ্গেও যোগ রয়েছে সেই সব ফেরিঘাটের।
এই তথ্য পাওয়ার পরেই জেলা পরিষদ একটি দল গঠন করে। যাঁরা নদীর বাঁধে ঘুরতে গিয়ে দেখেন জেলা পরিষদের অনুমোদনহীন অনেক ফেরিঘাট তৈরি হয়েছে। জেলা পরিষদের বন ও ভূমি স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ তপন প্রধান বলেন, মেদিনীপুর সদর ব্লকে কাঁসাই নদীর ওপরই এমন ১১টা ফেরিঘাটের সন্ধান মিলেছে। এছাড়াও দাঁতন-২ ব্লকেও মিলেছে এমন ফেরিঘাটের সন্ধান। চন্দ্রকোনা, দাসপুর, ঘাটালে শিলাবতী নদীর ওপর, সবংয়ে কেলেঘাই-কপালেশ্বরী নদীর ওপর এমন কোনও ফেরিঘাট রয়েছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তপন জানান, ‘জেলার প্রতিটি এলাকায় এমন ফেরিঘাটের সন্ধান পেতে পঞ্চায়েতকেও কাজে লাগানো হবে।’