'বাড়িতে আগুন, মারধর...', মুর্শিদাবাদ থেকে ভয়ে পালাচ্ছে বহু মানুষ
আজ তক | ১৩ এপ্রিল ২০২৫
মুর্শিদাবাদে সাম্প্রতিক হিংসা এখনও থিতিয়ে পড়েনি। আপাত-শান্তির আড়ালে চাপা পড়ে আছে শরণার্থীদের চোখের জল, পোড়া ঘরের ধোঁয়া আর বিষমিশ্রিত জলের আতঙ্ক। ইতিমধ্যে মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান ও আশপাশের অঞ্চল থেকে পালিয়ে এসে মালদার পারলালপুর এলাকার একটি স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় ৫০০ জন মানুষ। এঁদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু।
নৌকায় করে জীবন নিয়ে পালিয়ে এসেছেন
ধুলিয়ান থেকে পালিয়ে আসা এক বাসিন্দা বললেন, "জলের ট্যাঙ্কে বিষ মেশানো হয়েছে। ঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। জীবন বাঁচানোর জন্য নৌকায় চড়ে নদী পেরিয়ে মালদায় এসেছি।" এই আশ্রয়প্রার্থীরা এখন মালদার পারলালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষে অস্থায়ী তাঁবু গেড়েছেন। সঙ্গে রয়েছেন ছোট ছোট সন্তান, সদ্যোজাত শিশু, বৃদ্ধা আত্মীয়রা।
'ঘর নেই, রেশন নেই'
এক মহিলা বলেন, "আমার বাড়ি ছিল ধুলিয়ানে। এখন কিছুই নেই। আগুনে পুড়েছে সব। আমাদের মারধর করা হয়েছে। রেশন নেই, খাবার নেই। তাই বাধ্য হয়েই ঘর ছেড়েছি।"
আতঙ্কের মধ্যে কাটছে দিন, চিকিৎসাও চলছে অস্থায়ীভাবে
স্থানীয় মানুষজন খাদ্য ও আশ্রয় দিয়ে এগিয়ে এসেছেন এই বিপন্ন মানুষদের পাশে। শরণার্থী শিবিরে স্থানীয় চিকিৎসকরা উপস্থিত হয়ে স্বাস্থ্যপরীক্ষাও করছেন। কিন্তু আতঙ্ক এখনো কাটেনি। অভিযোগ, হামলাকারীদের মধ্যে অনেকেই কিশোর বয়সী, বয়স ১৫-১৭’র মধ্যে।
প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
এই মানুষগুলো এখনো জানেন না কবে ফিরতে পারবেন নিজেদের গ্রামে। পুলিশ প্রশাসনের তরফে এখনো তাঁদের নিরাপত্তার বিষয়ে স্পষ্ট আশ্বাস মেলেনি।
এ যেন নিজের দেশেই উদ্বাস্তুর মতো জীবন—ছিন্নমূল এক অসহায় বাস্তব, যার সাক্ষী হয়ে উঠছে মালদার এই ছোট্ট স্কুলটি।