• 'রাজনীতির স্বার্থে বাংলার হিন্দুদের শেষ করতে চান মমতা', তীব্র আক্রমণ দিলীপের
    আজ তক | ১৩ এপ্রিল ২০২৫
  • মুর্শিদাবাদে হিংসা মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারকে তীব্র আক্রমণ করলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। তাঁর অভিযোগ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের রাজনীতির স্বার্থে বাংলার হিন্দু সমাজকে শেষ করে দিতে চাইছেন। তাঁর আরও দাবি, মমতা যতদিন ক্ষমতায় থাকবেন ততদিন বাংলায় আগুন জ্বলবে। রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারকে অকর্মণ্য বলে কটাক্ষ করেন দিলীপ।

    ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদ ঘিরে মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন জায়গায় হিংসা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে হিন্দু পরিবারের ২ জন রয়েছেন। শনিবার সকালে বাড়িতে ঢুকে তাঁদের কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। শুক্রবার গুলিবিদ্ধ এক যুবকের হাসপাতালে মৃত্যু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মুর্শিদাবাদের সুতি, সামশেরগঞ্জ-সহ একাধিক জায়গায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

    মুর্শিদাবাদের হিংসা নিয়ে যাবতীয় দায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘাড়ে চাপিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, 'রাম নবমীতে ডিস্টার্ব করার জন্য রাজ্য সরকার অনেক জায়গায় সমাজ বিরোধীদের, মৌলবাদীদের নামিয়ে দিয়েছিল। তারা ঝামেলা করে ভয় দেখানোর চেষ্টা করেছিল, তার উলটো হয়েছে। হিন্দু সমাজ রাস্তায় নেমেছে হাতিয়ার নিয়ে তার প্রতিকার করার জন্য। শিক্ষায় যে দুর্নীতি হয়েছে সেই পাপকে চাপা দেওয়ার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জঙ্গি, উগ্রপন্থীদের রাস্তায় নামিয়েছেন। দু'দিন ধরে মুর্শিদাবাদ জেলাতে যে তাণ্ডব হয়েছে, হিন্দুদের দোকান পাট লুট হয়েছে, বাড়ি ভাঙা হয়েছে, মন্দির ভাঙা হয়েছে, কয়েকশো কোটি টাকার সম্পত্তি নষ্ট করেছে। তাতেও রাজ্য সরকার চুপ করেছিল। পুলিশ সরে গিয়েছে, কেউ নেই। বিএসএফ সব নিয়ন্ত্রণ করছে। পরশুদিন আসার সময় দেখেছি চারিদিকে আগুন জ্বলছে। গাড়ি পুড়ে রাস্তায় পড়ে আছে। সে ভয়ঙ্কর দৃশ্য। তারপরে আধা সেনা নামামার জন্য কোর্টে যেতে হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় চাইছেন না হিন্দুরা থাকুক। রাজনীতির স্বার্থে হিন্দু সমাজকে উনি শেষ করে দিতে চাইছেন। চারিদিকে হাহাকার চলছে।'

    মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করে দিলীপ বলেন, 'পাপের বোঝা বাড়ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এটাই তাঁকে বিদেয় করবে। ডিজি রাজীব কুমার গল্প শোনাচ্ছিলেন কালকে। লজ্জা করে না। তবে যেহেতু তাঁকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেল যাওয়া থেকে বাঁচিয়েছেন তাই উনি তো তাঁবেদারি করবেনই। মিথ্য়াচারের একটা সীমা থাকা উচিত। মিথ্যা বলার প্রতিযোগিতা চলছে।  বাড়িতে ঢুকে বাবা ও ছেলেকে খুন করা হল। উগ্রপন্থীরা গুলি চালাচ্ছে, বিএসএফ-র গাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে। পুলিশ তো আগেই হাওয়া হয়ে গিয়েছে। অকর্মণ্য ডিজি, তাঁর কোনও ক্ষমতাই নেই। পুলিশকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর, যত নির্বাচন এগিয়ে আসবে তত বাড়বে এটা। জঙ্গিদের ভোট পেয়ে জিততে চান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলাদেশ থেকে লোকেরা এসে উৎপাত করছে।'

    শনিবার সবধর্মের মানুষকে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি হিংসাকে বাংলার সংস্কৃতি নয় বলেও জানিয়েছেন। এনিয়ে দিলীপ ঘোষের কটাক্ষ, 'বাংলায় এই সংস্কৃতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এনেছেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কপালে গুলি করার কথা বলেছিলেন, এবার কি পেছনে গুলি মারবেন উগ্রপন্থীদের। সে দম তো নেই। মুর্শিদাবাদ জেলা এখন পশ্চিম বাংলাদেশ হয়ে গিয়েছে। সুযোগ পেলেই আগুন জ্বালানো মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের রাজনীতি। যতদিন তিনি ক্ষমতায় থাকবেন ততদিন এই আগুন জ্বলবে আর হিন্দরা ঘরছাড়া হবে।'
  • Link to this news (আজ তক)