• প্রথম অযোগ্য হিসেবে চাকরি গিয়েছিল পরেশ-কন্যার, চাকরিহারাদের জন্য মিছিলে হাঁটলেন সেই অঙ্কিতা
    এই সময় | ১৩ এপ্রিল ২০২৫
  • অযোগ্য হিসেবে আদালতের নির্দেশে প্রথম চাকরি গিয়েছিল এ রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর। সেই অঙ্কিতা এ বার চাকরিহারাদের জন্য প্রতিবাদ মিছিলে পা মেলালেন। হলদিবাড়ি তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে এক মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল। সেই মিছিলের একেবারে পুরোভাগে দেখা গেল পরেশ-কন্যা অঙ্কিতাকে। স্লোগান তুললেন, ‘২৬ হাজার চাকরি খাওয়া হলো কার স্বার্থে মোদী তুমি জবাব দাও।’

    ২০২২ সাল থেকে অঙ্কিতা অধিকারীকে এক নামে চেনে গোটা বাংলা। তখন সবে মাত্র নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে শোরগোল শুরু হয়েছে রাজ্যজুড়ে। টেট মামলা নিয়ে হইচই। বেআইনি ভাবে চাকরি পেয়েছেন এমন এক প্রতিমন্ত্রীর কন্যার নাম উঠে আসে কলকাতা হাইকোর্টে। সে সময়ে বিচারপতি ছিলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশে সিবিআই দপ্তরে হাজিরা দিতে হয় মেখলিগঞ্জ ইন্দিরা উচ্চ বিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের তৎকালীন শিক্ষিকা অঙ্কিতা অধিকারী ও তাঁর বাবা বিধায়ক-মন্ত্রী পরেশ অধিকারীকে।

    এর পর পেঁয়াজের খোসার মতো খুলতে থাকে এই চাকরি পাওয়ার রহস্য। জানা যায়, এসএসসির প্রথম প্রকাশিত মেধা তালিকায় ২০ জনের মধ্যে অঙ্কিতা ছিলেনই না। অথচ ২০১৭ সালের নভেম্বর দ্বিতীয় তালিকা প্রকাশ হতেই সকলকে ছাপিয়ে একেবারে টপার হয়ে যান অঙ্কিতা। তালিকার শীর্ষে উঠে আসে তাঁর নাম। একেবারে বাড়ির কাছে স্কুলে চাকরিও পান। তদন্তে উঠে আসে, পরেশ অধিকারী প্রভাব খাটিয়ে মেয়ের চাকরির বন্দোবস্ত করেছেন। অঙ্কিতা কোনও ইন্টারভিউও দেননি বলে সামনে আসে তথ্য।

    এর পর তদন্ত এগোয়। ২০২২ সালে আদালত নির্দেশ দেয়, চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয় অঙ্কিতাকে। ২০১৮ সালের ২৪ নভেম্বর থেকে চাকরি করছিলেন অঙ্কিতা। এই দু’ বছর তিনি যে বেতন পেয়েছেন, তাও ফেরাতে হয় আদালতের নির্দেশেই। তোলপাড় চলে রাজ্যজুড়ে। এর পর জল গড়িয়েছে বহু দূর। সম্প্রতি এসএসসি মামলায় ২০১৬ সালের প্যানেল বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রায় ২৬ হাজারের চাকরি গিয়েছে।

    আর সেই চাকরিহারাদের হয়ে এ বার রাস্তায় সেই ‘চাকরিহারা’ অঙ্কিতা অধিকারী। শনিবার যোগ্য শিক্ষকদের চাকরিতে ফেরানোর দাবিতে হলদিবাড়িতে মিছিলে হাঁটেন তিনি। মূলত যুব তৃণমূল ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ব্যানারে এই মিছিল হয়। যুবর জেলা সভাপতি কমলেশ অধিকারীর একেবারে পাশেই ব্যানার ধরে মিছিলে পা মেলাতে দেখা যায় অঙ্কিতা অধিকারীকে। বিজেপি ও সিপিএমের জন্যই এই চাকরি গিয়েছে বলেও স্লোগান দিতে শোনা যায় তাঁকে।

    যদিও এ নিয়ে এক যোগে খোঁচা দিয়েছে বিজেপি ও সিপিএম। বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক শ্যাম প্রসাদের খোঁচা, ‘আমরা শুনেছি, চোরের মায়ের বড় গলা। এখন সেটা দেখতেও পাচ্ছি। চাকরি চুরিতে অভিযুক্তরাই মিছিল করছে। এদের জন্যই যোগ্য শিক্ষিতরা চাকরি পাননি। ভুলে গেল কী করে?’ অন্য দিকে এসএফআই-এর লোকাল কমিটির সম্পাদক আকাশ রায়ের দাবি, অঙ্কিতা অধিকারীর বিষয়ে গোটা পশ্চিমবঙ্গের মানুষ সবটা জানেন। এখানে তাঁদের আর আলাদা করে বলার কিছুই নেই।

  • Link to this news (এই সময়)