চিকিৎসকের পরামর্শে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ইউএসজি করাতে গিয়েছিলেন মাস তিনেকের অন্তঃসত্ত্বা এক বধূ। সেখানেই কর্তব্যরত রেডিয়োলজিস্ট তাঁকে যৌন নির্যাতন করেন বলে অভিযোগ। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনি থানা এলাকায়। নির্যাতিতার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার (১২ এপ্রিল) ভোরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভূপতিনগর এলাকা থেকে অভিযুক্ত রেডিয়োলজিস্টকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ধৃতকে মেদিনীপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক ৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই নির্যাতিতার গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সপ্তাহখানেক আগে শালবনির এক নামী ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ইউএসজি করাতে গিয়েছিলেন ওই বধূ। ইউএসজির সময়ে সেন্টারের বাইরেই ছিলেন তাঁর স্বামী ও শাশুড়ি। ভিতরে ইউএসজি করার অছিলায় নির্যাতিতাকে যৌন নির্যাতন করে ওই রেডিয়োলজিস্ট বলে অভিযোগ। ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে বেরিয়েই প্রথমে স্বামী ও শাশুড়িকে কিছু না জানালেও, বাড়ি ফেরার পর ঘটনার বিষয়ে মুখ খোলেন নির্যাতিতা। ওই দিন সন্ধ্যাতেই শালবনি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তাঁরা।
এ দিকে তদন্ত শুরু হতেই রেডিয়োলজিস্টের আসল পরিচয় নিয়েও প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। পুলিশ তো বটেই, ধৃতের নাম-পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্ত ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্ণধারও। ‘এই সময় অনলাইন’-কে তিনি বলেন, ‘মাত্র দু’সপ্তাহ হলো তিনি আমাদের এখানে যোগ দিয়েছেন। চিকিৎসক পি মাইতি নামে তিনি এখানে কাজ করছেন। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম অন্য এক পি মাইতির নাম ভাঁড়িয়ে এবং ভুয়ো শংসাপত্র দেখিয়ে তিনি বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতেন।’
‘পশ্চিম মেদিনীপুর ডায়াগনস্টিক ওনার্স ওয়েলফার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক বিশ্বনাথ দাস বলেন, ‘ইতিমধ্যেই জেলার বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে আমরা ভুয়ো টেকনিশিয়ান এবং ডাক্তার নিয়ে সচেতন করেছি। আমাদের অভিযোগের ভিত্তিতেই গত দুই-তিন সপ্তাহের মধ্যে জেলার দু’টি ডায়গনস্টিক সেন্টার বন্ধও করে দিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর। শালবনির ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের যথেষ্ট সুনাম আছে। ওরাও আসলে প্রতারিত হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।’
ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্ণধার জানিয়েছেন, ভুয়ো পি.মাইতির নামে শালবনি থানায় প্রতারণার লিখিত অভিযোগ দায়ের করবেন তিনি। তবে এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত প্রতারণার বিষয়ে কোনও পৃথক অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেছেন, ‘প্রতারণার কোনও লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে তদন্তে সমস্ত দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমরাও দু’জন পি মাইতির কথা জানতে পেরেছি। কে আসল আর কে নকল, খতিয়ে দেখা হবে।’
(তথ্য সহায়তা: মণিরাজ ঘোষ)