• ‘স্কুলে চাকরি পাওয়াটাই জীবনে কাল হলো?’, হতাশ অরিন্দম, মন খারাপ পড়ুয়াদেরও
    এই সময় | ১৩ এপ্রিল ২০২৫
  • মন খারাপ সকলের। নিয়মমাফিক ক্লাস হলেও পড়াশোনায় মন বসাতে পারছে না অনেক পড়ুয়াই। সকলের একটাই বায়না, ‘অরিন্দম স্যরকে ফেরত চাই।’ পড়ুয়াদের সামনে অসহায় প্রধান শিক্ষকও।  সুপ্রিম রায়ে চাকরি গিয়েছে পড়ুয়াদের ‘প্রিয় স্যর’-এর। আইটি সেক্টরে চাকরির পরে কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরিও মেলে। পরিবারের ইচ্ছেয় স্কুলে শিক্ষকতার চাকরির পরীক্ষায় বসেন। ‘অভিশপ্ত’ সেই ২০১৬-এর প্যানেলে তাঁর নামও ছিল। ‘সেই চাকরি পাওয়াটাই জীবনে কাল হলো?’ উত্তর মিলছে না মালদার শিক্ষক অরিন্দম দাসের।

    মালদার বামনগোলা ব্লকের পাকুয়াহাট এএনএম হাইস্কুলে পদার্থবিদ্যা পড়াতেন শিক্ষক অরিন্দম দাস। বাবা-মায়ের ইচ্ছেতেই সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। চাকরি হারিয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন তিনি।

    অরিন্দম জানান, ২০১৯ সালে পাকুয়া হাট এএন এম হাইস্কুলে শিক্ষকতার চাকরি শুরু করেছিলেন। সেই সময় থেকেই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের পাশাপাশি স্কুলের সহকর্মী, শিক্ষক-শিক্ষিকা সকলের সঙ্গেই আত্মীয়তা গড়ে উঠেছিল। স্কুলের পড়াশোনার বাইরেও স্কুলের যাবতীয় কাজ দেখাশোনা করতেন। নিজের বাসভবনে ডেকে বিনা পয়সায় ছাত্র-ছাত্রীদের কোচিং দিতেন। বাড়িতে পড়তে আসে তারা। কিন্তু চাকরি খুইয়ে, সম্মান খুইয়ে স্কুলমুখো হতে পারেননি অরিন্দম।

    তাঁর কথায়, ‘চাকরিহারা হওয়ার পর থেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। অসম্মান নিয়ে নয়, স্কুলে ফিরতে চাই সম্মানের সঙ্গেই। সরকার ও সুপ্রিম কোর্ট আগামীতে কতটা মানবিক দিক থেকে সিদ্ধান্ত নেয় সেই অপেক্ষায় রয়েছি।’

    অরিন্দমকে না পেয়ে হতাশ স্কুলের প্রশ্ন শিক্ষক তপনচন্দ্র সরকার। স্কুলে প্রায় ৩৫০০ ছাত্রছাত্রী রয়েছে। স্কুলে মোট ৩৯ জন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে ৮ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও দু’জন শিক্ষাকর্মী না আসায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘অরিন্দম শুধু ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনা করাতেন তা নয়, এর বাইরেও স্কুলের যাবতীয় সরকারি কাজ দেখাশোনা করতেন। স্কুলের সাংস্কৃতিক বিষয়গুলি দেখাশোনা করা, খেলাধুলার উন্নতি, স্কুলের পরিকাঠামো সবকিছু নিয়েই ভাবনাচিন্তা করতেন। আজকে তাঁর অভাব আমরা কিছুতেই মেটাতে পারব না।’

  • Link to this news (এই সময়)