সংশোধিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে অশান্ত মুর্শিদাবাদ। শুক্রবার থেকেই হিংসা ছড়িয়েছিল সুতি, সামশেরগঞ্জ এলাকায়। এই অবস্থায় নাকি প্রাণ বাঁচাতে অনেকেই ধুলিয়ান ছাড়ছেন। নদীপথে পালিয়ে যাচ্ছেন মালদায়। ধুলিয়ানের অন্য পাড়ে মালদার কালিয়াচক ৩নং ব্লকের বৈষ্ণবনগর থানার অন্তর্গত পারদেওনাপুর, পাল্লালপুর এলাকাতে ঘাঁটি গাড়ছেন তাঁরা বলে শোনা যাচ্ছে। নদীপথে পালানোর বেশ কিছু ছবি-ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মডিয়ায়। যদিও সেই সব ছবি-ভিডিয়ো-এর সত্যতা যাচাই করেনি এই সময় অনলাইন।
তবে ধুলিয়ান থেকে পালিয়ে মালদায় এসেছেন বলে দাবি করছেন অনেকেই। তাঁদের অভিযোগ, ধুলিয়ানে তাঁদের ঘরে ঢুকে ভাঙচুর করা হয়েছে। অবাধে চলেছে লুটপাট। অনেকের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিষ মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে ট্যাঙ্কের জলে।
যেমন নমিতা মণ্ডল। এখনও তাঁর চোখে মুখে আতঙ্কের রেশ রয়েছে। তাঁর দাবি চার বছরের শিশু সন্তানকে বুকে আঁকড়ে কোনও রকমে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। নমিতা বলেছেন, ‘চারপাশে বোম ফাটছে। আর ছেলেটা আমায় আঁকড়ে ধরছে। এই অবস্থায় আমরা পালাই। আমাদের বিষ খাইয়ে মেরে ফেলা হোক। এ ভাবে বাঁচা যায় না। আগে প্রাণ বাঁচাই, তারপর অন্য কথা ভাবব। জানি না কবে আবার বাড়ি ফিরতে পারব? আমরা শান্তি চাই।’
নমিতার সুরই শোনা গিয়েছে ধুলিয়ানের বাসিন্দা সপ্তমী মাঝির গলাতেও। তাঁরও দাবি, সদ্যোজাতকে নিয়ে সব ছেড়ে পালিয়ে এসেছেন মালদায়। তিনি বলেছেন, ‘বাড়িঘর সব জ্বালিয়ে দিয়েছে। তিনদিনের শিশুকে নিয়ে দৌড়ে বেড়াচ্ছি। খাবার নেই। জলের ট্যাঙ্কে বিষ মিশিয়ে দিয়েছে।’ তাঁর অসহায় প্রশ্ন, ‘আমরা তো কিছু করিনি। আমাদের উপর এরকম অত্যাচার কেন?’
রবিবার মালদার এসডিও পঙ্কজ তামাং নেতৃত্বে জেলা পরিষদের আধিকারিকরা পাল্লালপুরে এসেছিলেন। ধুলিয়ান থেকে পালিয়ে আসা বাসিন্দাদের হাতে শুকনো খাবার, বস্ত্র তুলে দেওয়া হয়। এসডিও পঙ্কজ তামাং বলেছেন, ‘যতদিন না পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, ততদিন ওঁরা এখানেই থাকবেন। প্রশাসন পাশে রয়েছে। এখানে থাকতে ওঁদের কোন অসুবিধা হবে না।’