পড়ুয়া অনুপাতে সংখ্যা অনেক বেশি, সোদপুরের দুই স্কুল থেকে শিক্ষক বদলির দাবি
প্রতিদিন | ১৪ এপ্রিল ২০২৫
অর্ণব দাস, বারাকপুর: সুপ্রিম রায়ে প্রায় ছাব্বিশ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা চাকরি হারিয়ে ক্লাস করানো নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে রাজ্য সহ উত্তর ২৪ পরগনার বহু স্কুলে। এমন পরিস্থিতিতে ঠিক উলটপুরাণ সোদপুরে। সেখানের এইচ বি টাউনের পাশাপাশি দুটি স্কুলের পড়ুয়াদের থেকে কয়েকগুণ বেশি শিক্ষক। প্রায় প্রতিদিন পড়ুয়াদের অনুপস্থিতির কারণে আড্ডা দিয়ে সময় কাটিয়ে বাড়ি ফেরেন শিক্ষকরা। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে একসঙ্গে হাজারে হাজারে শিক্ষক চাকরি হারানোর খবরে পথে নেমে শুরু আন্দোলন। ক্লাস করানো নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে বহু স্কুলে। এমন আবহের এই দুই স্কুলের উলটো পরিস্থিতি নিয়ে এবার সরব হয়েছেন সোদপুরবাসী। তাদের মূলত একটাই দাবি, যে যে স্কুলে শিক্ষকের প্রয়োজন সেখানে বদলি করা হোক এই দুই স্কুলের শিক্ষকদের।
একটি স্কুল সোদপুর সুশীলকৃষ্ণ শিক্ষায়তন ফর বয়েজ। জানা গিয়েছে, বর্তমানে এই স্কুলে ছাত্রের সংখ্যা ৫জন, আর শিক্ষক-শিক্ষিকা ১১জন। প্রতিদিন নিয়মিত শিক্ষকরা স্কুলে উপস্থিত হলেও পড়ুয়া আসে খুব বেশি হলে এক-দু’জন। ফলে গল্প করেই সময় কাটিয়ে বাড়ি চলে যান শিক্ষকরা। আর সেই সুযোগে স্কুলের মাঠেই শুরু হয়ে যায় কচিকাঁচাদের ক্রিকেট খেলা। এর পাশেই রয়েছে ঘোলা ভুবনেশ্বরী বালিকা বিদ্যালয়। সূত্রের খবর, এই স্কুলে পড়ুয়া সংখা শূন্য, কিন্তু শিক্ষিকা আছেন ১৯জন। তাঁরা প্রতিদিন স্কুলে আসেন নিজেদের উপস্থিতি দেখাতে। তারপর সময় কাটিয়ে ফিরে যান বাড়িতে। এই প্রসঙ্গে অবশ্য ভুবনেশ্বরী বালিকা বিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষিকা মুখ খুলতে চাননি। সুশীলকৃষ্ণ শিক্ষায়তন ফর বয়েজ স্কুলের প্রধান শিক্ষক অমিত হবিশ্বাসী শুধুমাত্র জানিয়েছেন, “আলাদা করে কিছু বলার নেই। সকলেই এটা জানে। কোনো মন্তব্য করবো না।”
এনিয়ে সুপ্রিম রায়ে চাকরিহারার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সরব হয়েছেন এলাকাবাসী। স্থানীয় বাসিন্দা শিবনারায়ণ রায় বলেছেন, “দুটি স্কুলেই পড়ুয়া আসেনা। শিক্ষকের সংখ্যা বেশি। তাঁরা স্কুলে আসে, দেড়-দু’ঘন্টা আড্ডা দিয়ে চলে যায়। বসে বসে প্রতিমাসে এভাবে বেতন নেওয়া খুবই দৃষ্টিকটু। সরকারের কাছে আমাদের আবেদন, অনেক স্কুলে টিচারের অভাবে ক্লাস হচ্ছে না। সেখানে এই শিক্ষকদের বদলি করা হোক।” আরেক স্থানীয় বাসিন্দা মিন্টু রায় বলেন, “নামমাত্র পড়ুয়া থাকায় শিক্ষকরা আসে, সময় কাটিয়ে চলে যায়। তাই আমরা বলব যে স্কুলে শিক্ষকের অভাব রয়েছে সেখানে এদের বদলি করা হোক।”