সংশোধিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে মুর্শিদাবাদ জুড়ে শুরু হয়েছিল প্রতিবাদ, বিক্ষোভ। যাকে কেন্দ্র করে পরবর্তীতে অশান্ত হয়ে ওঠে সামশেরগঞ্জ, ধুলিয়ান, সুতি এলাকা। ভাঙচুর হয় ঘরবাড়ি, গাড়ি-বাইকে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। অশান্তির ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি চালাতে হয় পুলিশকে। মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে রাজ্য পুলিশ, সকলের এই পরিস্থিতিতে একটাই আর্জি, গুজবে কেউ কান দেবেন না। এর মাঝেই BJP-র পক্ষ থেকে বাংলায় বিভিন্ন পুজোপার্বণের সময়কার অশান্তির দৃশ্য হিসেবে দাবি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় একগুচ্ছ ছবি পোস্ট করা হয়। যা নিয়ে ফ্যাক্ট চেক করল পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ।
BJP-র পোস্টের পাল্টা ছবির কোলাজ পোস্ট করল রাজ্য পুলিশ। দাবি করা হলো, CAA আন্দোলনের সময়কার ছবিগুলিকে পুজোপার্বণের বলে উল্লেখ করে ভুয়ো পোস্ট করা হয়েছে BJP-র পক্ষ থেকে। প্রতিটি ছবির সময় এবং ঘটনাস্থল দিয়ে পোস্ট করা হয় রাজ্য পুলিশের তরফে। সাফ জানিয়ে দেওয়া হয় BJP-র পোস্টের দাবি ভুল।
BJP-র করা পোস্টে রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে একটি বিক্ষোভের দৃশ্যকে গণেশ চতুর্থীর বলে দাবি করা হয়েছে। রাজ্য পুলিশের দাবি, সেটি নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বিরোধী আন্দোলনের সময়ের। সরস্বতী পুজোর সময়ের অশান্তি বলে যেটি BJP দাবি করেছে, রাজ্য পুলিশের দাবি সেটি আদতে উত্তরপ্রদেশের লখনৌতে CAA বিরোধী আন্দোলনের সময়ের ছবি। এ ভাবে উত্তরপ্রদেশ, অসম, কর্নাটকের বিভিন্ন বিক্ষোভ-আন্দোলনের ছবিগুলিকে BJP মুর্শিদাবাদের বলে উল্লেখ করেছে বলে জানিয়েছে রাজ্য পুলিশ। উল্লেখ্য, এই ফ্যাক্ট চেকের পর BJP-র পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট পোস্টটি ডিলিট করে দেওয়া হয়েছে।
রবিবার সন্ধ্যার পর থেকে কিছুটা হলেও ছন্দে ফিরেছে মুর্শিদাবাদ। পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের। BSF এবং স্থানীয় পুলিশের থেকে বর্তমান পরিস্থিতির খোঁজখবর নিয়েছেন রাজ্যপাল। তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে মোতায়েন রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। যে কোনও রকম পরিস্থিতির জন্য আরও বাহিনী প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যেই নয় কোম্পানি BSF রয়েছে। রাজ্য পুলিশও সক্রিয়। হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে বহু ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। কোনও দুষ্কৃতী এবং তাদের গডফাদারদের হিংসা ছড়াতে দেওয়া হবে না। কড়া হাতে দমন করা হবে তাদের। আইন হাতে নিতে দেওয়া হবে না কাউকে। বাংলায় কোনও সংঘর্ষ চলবে না।’