• চৈত্র শেষে কালবৈশাখী, ঝড়-শিলাবৃষ্টিতে লন্ডভন্ড কোচবিহার
    বর্তমান | ১৪ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কোচবিহার: শনিবার রাতে ঝড়-শিলাবৃষ্টিতে লন্ডভন্ড হল কোচবিহারের বিস্তীর্ণ এলাকা। ঝড়ের তাণ্ডবে কোচবিহার শহরের বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে গাছ পড়ে বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তুমুল ঝোড়ো হওয়ায় ভবানীগঞ্জ বাজারের ফিস মার্কেটের বিল্ডিংয়ের ছাদের কার্নিশের একাংশ ভেঙে পড়ে। রাত ২টো থেকে ঝড়ো হাওয়া শুরু হয়। এরপর শিলাবৃষ্টি। ঘণ্টা খানেক তুমুল বৃষ্টি হয়। 

    হাওয়ার দাপটে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বহু বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়ে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ট্রান্সফরমার, বিদ্যুতের তার। রাতভর বহু এলাকা অন্ধকারে ডুবে থাকে। যদিও রাতেই কাজে নামে বিদ্যুৎদপ্তরের টিম। রবিবার সন্ধ্যাতেও অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হয়নি। 

    এদিকে, ঝড়ের কারণে কৃষি ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা হলেও বৃষ্টি বোরো চাষে ভালো হল বলে মনে করছে কৃষিদপ্তর। তবে ঝড়ে কোনও এলাকায় চাষের ক্ষতি হয়ে থাকলে তা সরেজমিনে খতিয়ে দেখে সেই কৃষককে বাংলা শস্য বিমা যোজনার সুবিধা পাইয়ে দেওয়া যায় কি না তা কৃষিদপ্তর দেখবে বলে জানিয়েছে। 

    পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির কোচবিহার রিজিওনাল ম্যানেজার বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ঝড়ে বিদ্যুৎ দপ্তরের প্রায় ৬০ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমাদের সমীক্ষা চলছে। এর পরিমাণ আরও বাড়বে বলে মনে হচ্ছে। ছোট ছোট টিম গড়ে পাঁচশো কর্মীকে কাজে নামিয়েছি। আমরা সর্বত্র বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক করতে কাজ চলাচ্ছি। আশা করছি, রবিবার রাতের মধ্যেই অধিকাংশ জায়গায় বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া সম্ভব হবে। 

    কোচবিহার জেলা কৃষি আধিকারিক অসিতবরণ মণ্ডল বলেন, কালবৈশাখীর প্রভাবে কিছু এলাকায় ভুট্টা গাছ শুয়ে পড়েছে। তবে এখনও যতদূর খোঁজ পেয়েছি তাতে সামগ্রিকভাবে চাষের খুব বেশি ক্ষতি হয়নি। বোরো ও সব্জি চাষে এই বৃষ্টি সার্বিকভাবে সেচের কাজ করবে। ঝোড়ো হাওয়ার কারণে ভুট্টা খেত ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেটা বাংলার শস্য বিমা যোজনা আওতায় এনে চাষিদের সুবিধা পাইয়ে দেওয়া যায় কি না আমরা দেখব। 

    কোচবিহার জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুরজকুমার ঘোষ বলেন, শনিবার গভীর রাতে ঝড়-বৃষ্টির কারণে ভবানীগঞ্জ মাছ বাজারের বিল্ডিংয়ের ছাদের কার্নিশের একাংশ ভেঙে পড়ে। ওই সময় সেখানে একজন ছিলেন। তিনি অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন। অনেক জায়গায় বিল্ডিং বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। এসব দিকে এখনই নজর না দিলে বর্ষায় বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। 

    বিদ্যুৎ দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলাজুড়ে প্রায় ১৫০টি বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়েছে। বজ্রপাতে ২৫টি টান্সফরমার বিকল হয়ে গিয়েছে। অসংখ্য জায়গায় বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গিয়েছে। ঘুঘুমারি, দেওয়ানহাট, কোচবিহার সদর, খাগড়াবাড়ি, মাথাভাঙা-১, সাহেবগঞ্জ প্রভৃতি এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটি, ট্রান্সফরমার, তারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে বলে দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)