নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: দার্জিলিং চায়ের পর কালিম্পং কফি। এবার সেই কফিকে ‘ব্র্যান্ড’ হিসেবে তুলে ধরবে রাজ্য সরকার। কালিম্পং জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকের পর এ কথা জানান পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। তিনি এজন্য স্থানীয় চাষিদের উন্নত প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। এদিকে, কালিম্পংয়ের কফি প্রতিবেশী রাষ্ট্র নেপাল ও প্রতিবেশী রাজ্য সিকিমে পাড়ি দিচ্ছে বলে খবর। এই অবস্থায় রাজ্য সরকার ও জিটিএ’র সহযোগিতার আশ্বাস পেয়ে স্থানীয় চাষিরা রীতিমতো উচ্ছ্বসিত।
শনিবার শিলিগুড়ির দীনবন্ধুমঞ্চে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী। বৈঠকে শিলিগুড়ি মহকুমার ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের এবং দার্জিলিং ও কালিম্পং পহাড়ের দ্বিস্তরীয় পঞ্চায়েতের প্রতিনিধি, প্রশাসন ও জিটিএ’র আধিকারিকরা ছিলেন। প্রশাসন সূত্রে খবর, দীর্ঘক্ষণ ধরে চলা বৈঠকে কালিম্পংয়ের কফি চাষের বিষয়টি তুলে ধরেন পঞ্চায়েত প্রতিনিধি ও আধিকারিকরা। সেখানেই কফি বাজারজাত করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে পাহাড়ের গ্রামীণ অর্থনীতি আরও চাঙ্গা হবে বলেই প্রশাসনের আশা।
বৈঠকের পর পঞ্চায়েতমন্ত্রী জানান, কালিম্পংয়ের কফিকে ‘ব্র্যান্ড’ হিসেবে তুলে ধরাই লক্ষ্য। তাই এই কফি বাজারজাত করতে সুদৃঢ় পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে সেখানকার চাষিদের সবরকমভাবে সহযোগিতা করা হবে। পাশাপাশি উন্নতমানের কফি চাষ করতে স্থানীয় চাষিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এজন্য জেলা প্রশাসনকে চাষিদের নামের তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে। প্রশিক্ষণের বিষয়ে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউটস অব ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে কথা বলা হবে।
দার্জিলিংয়ের চা জগৎ বিখ্যাত। দেশের পাশাপাশি বিদেশেও সরবরাহ হয় দার্জিলিং চা। যা বর্তমানে একটি ব্র্যান্ড। এবার কালিম্পংয়ের কফিও সেই পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাইছে জিটিএ ও রাজ্য সরকার। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে বোতলবন্দি হয়ে কালিম্পং কফি বাজারে এসেছে। যা ভেষজ উপায়ে তৈরি। তা কলকাতা, প্রতিবেশী রাজ্য সিকিম ও প্রতিবেশী রাষ্ট্র নেপালে পাড়ি দিচ্ছে বলে খবর। উদ্যানপালন দপ্তরের সহযোগিতায় এই চাষ করছেন স্থানীয় চাষিরা। স্থানীয়দের বক্তব্য, এর আগে উদ্যানপালনমন্ত্রী কফি চাষে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। এবার পঞ্চায়েতমন্ত্রীও এখানকার কফিকে ব্র্যান্ডে পরিণত করার আশ্বাস দিয়েছেন। এবার এই কফি বাজারজাত করতে সুবিধা হবে বলেই আশা করছি।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে কালিম্পংয়ে কফি চাষ শুরু হয় মাত্র দুই একর জমিতে। বর্তমানে এখানে চাষের জমি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯৪ একর। বার্ষিক কফি উৎপাদনের পরিমাণ ১৫ কুইন্টাল। এরসঙ্গে জড়িত প্রায় ১২৫০ জন কৃষক। যার ৭৫ শতাংশ কালিম্পং এবং ২৫ শতাংশ দার্জিলিংয়ের। জিটিএ, উদ্যানপালন দপ্তর ও বিশ্ববাংলার মাধ্যমে কালিম্পংয়ের কফি বাজারজাতও হচ্ছে।