• নিরাপদ আশ্রয় ও কাজের খোঁজে ভারতে ক্রমশ অনুপ্রবেশ বাড়ছে বাংলাদেশিদের!
    বর্তমান | ১৪ এপ্রিল ২০২৫
  • সংবাদদাতা, মেখলিগঞ্জ: দেশ ছেড়ে অবৈধভাবে সীমান্ত টপকে ভারতে ঢুকছে বাংলাদেশের নাগরিকদের একটা অংশ। সম্প্রতি এই প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় ভারতীয় পুলিস ও প্রশাসনিক মহলে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিস জানিয়েছে, অনুপ্রবেশকারীদের সিংহভাগই যুবক। ওই দেশে অন্তর্বর্তী  সরকার ক্ষমতায় আসার পর অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে বলে ওপারেরই অনেকের অভিযোগ। সেই কারণে পেটের টানে বাংলাদেশিরা বাধ্য হয়ে ভারতে ঢুকছেন বলে অনুমান করা হচ্ছে। 

    কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ সীমান্ত থেকে সাম্প্রতিককালে ধরা পড়া বাংলাদেশি নাগরিকরাই জানাচ্ছেন, তাঁদের এই অচলাবস্থার কথা। অর্থনৈতিক খারাপ অবস্থার পাশাপাশি,তাঁদের উপর বিভিন্নরকম অত্যাচার হচ্ছে বলে অভিযোগ। তাই নিজেদের বাঁচাতে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে ভারতকেই বেছে নিচ্ছেন তাঁরা। শনিবার মেখলিগঞ্জের ধাপড়া সীমান্ত এলাকা থেকে চারজন বাংলাদেশি সহ একজন ভারতীয় নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে কুচলিবাড়ি থানার পুলিস। ধৃতরা হল— সুজনচন্দ্র রায়, মাধবীরানি রায়, নিদ্রারানি রায়, আবুবক্কর সিদ্দিক ও সাহেব খান। প্রথম তিনজন বাংলাদেশের নীলফামারি জেলার ডোমার থানা এলাকার বাসিন্দা। আবুবক্করের বাড়ি ওই দেশের নোরাইলে। চারজনেরই বয়স ১৯ থেকে ২৪ বছরের মধ্যে। সাহেব খান ভারতীয়। 

    ইতিপূর্বেও কাজের খোঁজে ভারতে এসে বাংলাদেশি যুবকদের ধরা পড়ার একাধিক ঘটনা সামনে এসেছে। তাই অনেকেই মনে করছেন,ওই দেশের যুবকদের একটা অংশের মধ্যে ভারতে আসার আগ্রহ বাড়ছে। পুলিসি জেরায় তারা স্বীকারও করেছে, কাজের সন্ধানেই চোরাপথে ভারতে এসেছে। এক্ষেত্রে মোটা টাকার বিনিময়ে দুই পারের দালালরা সহযোগিতা করেছে। 

    মাথাভাঙার অতিরিক্ত পুলিস সুপার সন্দীপ গড়াই জানিয়েছেন, কুচলিবাড়ির ধাপড়া থেকে গ্রেপ্তার করা বাংলাদেশিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে বেশকিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে। ওই ঘটনায় একজন ভারতীয়কেও ধরা হয়েছে। তদন্ত চলছে।

    বিএসএফ ও পুলিস সূত্রেই জানা গিয়েছে, গত ৬ মার্চ একজন, ১০ মার্চ দুই রোহিঙ্গাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। গ্রেপ্তার হওয়া ওই ওই দুই রোহিঙ্গার নাম মহম্মদ রেজওয়ান এবং ফার্মিনা আখতার। এরপর ২১ মার্চ এই সীমান্ত থেকেই বাংলাদেশের পাঁচ নাগরিককে আটকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের হাতে তুলে দেন বিএসএফের ৬ নম্বর ব্যাটালিয়নের কর্মকর্তারা। ওই পাঁচজন সীমান্ত পেরিয়ে চোরাপথে আগেই ভারতে ঢুকেছিলেন। দিল্লিতে শ্রমিকের কাজ করত। অবৈধভাবে দেশে ফেরার সময় ধরা পড়ে যান। অর্থাৎ ধরা পড়া ওপারের নাগরিকদের অধিকাংশই যা জানাচ্ছেন, তাতে কাজের খোঁজেই চোরাপথে ভারতে আসছেন তাঁরা। 

    এদিকে, মেখলিগঞ্জ সীমান্ত থেকে পরপর বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ধরা পড়ার ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। উদ্বিগ্ন পুলিস ও বিএসএফের কর্তারাও। বিএসএফের উত্তরবঙ্গের আইজি সূর্যকান্ত শর্মার অবশ্য বক্তব্য, সীমান্তে সর্বদাই বিএসএফের কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা জারি রয়েছে।  
  • Link to this news (বর্তমান)